শিরোনাম
বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে হবে নিরাপত্তা প্রাচীর

মানিক মুনতাসির

কক্সবাজারে স্থাপিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শরণার্থীদের নিরাপত্তার জন্য চারদিকে নিরাপত্তা প্রাচীর (কাঁটাতারের বেড়া) দেওয়া হবে। এতে ক্যাম্পের ভিতরের এবং ক্যাম্পের আশপাশের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে বলে মনে করে স্থানীয় প্রশাসন। ক্যাম্পের ভিতরে অযাচিত কেউ যেন প্রবেশ করতে না পারে এবং ক্যাম্পের ভিতরে অবস্থানকারী কোনো শরণার্থী যেন বাইরে বেরোতে না পারে সেজন্য এমন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। আর এই নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণের জন্য তিন কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থবিভাগ। এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকরা এ দেশে যেন কোনো ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে জড়াতে না পারে সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অর্থবিভাগের একটি সূত্র জানায়, স্থানীয় প্রশাসন, ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। এতে একদিকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। অন্যদিকে সেখানকার স্থানীয় নাগরিকরাও (বাংলাদেশি) সুরক্ষা পাবেন। ইতিমধ্যে কিছু জায়গায় নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল গণমাধ্যমকে বলেন, শরণার্থীরা বাংলাদেশি নাগরিকদের সঙ্গে সহিংসতা ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হতে না পারে সেজন্য ১১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চারদিকে নিরাপত্তা প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে।” এদিকে অর্থবিভাগের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা জানান, ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন ও পুনর্বাসন কমিশন কক্সবাজার সদর, উখিয়া টেকনাফ ও রামুর ১১টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে শক্তিশালী কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। এতে ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে। অর্থমন্ত্রী এই চাহিদাপত্রে ইতিমধ্যে স্বাক্ষর করেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ অক্টোবর রোহিঙ্গারা দুজন বাংলাদেশিকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে প্রচণ্ডভাবে আহত করে। এবং অপর একটি ঘটনায় এক বাংলাদেশিকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনার পর স্থানীয় প্রশাসন নিরাপত্তা প্রাচীর নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্যমতে, বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় ধরনের বাড়তি চাপ। শুধু নিরাপত্তার জন্যই নয় এসব রোহিঙ্গা নাগরিকের খাদ্য, চিকিৎসাসহ মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে জাতিসংঘ। এ ছাড়া কক্সবাজারের যে এলাকায় রোহিঙ্গাদের থাকার জন্য অস্থায়ী ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে সেটাও ওই অঞ্চলের প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য একটা বড় ধরনের ঝুঁকি বলে মনে করে জাতিসংঘ। এজন্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব রোহিঙ্গা নাগরিককে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারেরর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহল।

সর্বশেষ খবর