বুধবার, ১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

মুমূর্ষু যুবরাজকে নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

মুমূর্ষু যুবরাজকে নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়

কুমিল্লা চিড়িয়াখানার যুবরাজ সিংহ ভালো নেই। অনেক দিন ধরে শয্যাশায়ী। খাবারও তেমন মুখে তুলছে না। যুবরাজকে দেখতে গিয়ে দর্শনার্থীদেরই উল্টো মন খারাপ হয়ে যায়। গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ প্রতিদিন অনলাইনে ‘চিড়িয়াখানার রুগ্ন সিংহের ছবি নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করেন— জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান, ভেটেরিনারি সার্জন ডা. নাজমুল হক, সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা চন্দন কুমার পোদ্দার ও সদর উপজেলার ভেটেরিনারি সার্জন ডা. জাকির হোসেন। সালমান নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী যুবরাজের ছবি দিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন, ‘যারা যুবরাজের খাবার খেয়ে ফেলেছে তাদের বিচার চাই। তাদেরও এভাবে খাঁচায় বন্দী করে রাখা হোক।’

কামাল হোসেন লিখেছেন, ‘ঠিকাদার জেলা পরিষদকে খাওয়ালে বিল পাবে, সিংহকে খাওয়ালে বিল পাবে না।’ সরেজমিন চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, খাঁচাগুলো শূন্য। সব মিলিয়ে ৮টি বানর, ৩টি বন মোরগ ও ৩টি হরিণ রয়েছে। একমাত্র সিংহ ‘যুবরাজ’ মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। যে কোনো সময় এটি মারা যেতে পারে। কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় তেমন দর্শনার্থী নেই। চিড়িয়াখানা অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো।  নাম সর্বস্ব। গত ৫ বছর ধরে এমন দুরাবস্থা কুমিল্লা চিড়িয়াখানার।

সূত্র মতে, ১৯৮৬ সালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি মৌজায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে ১০.১৫ একর ভূমিতে গড়ে উঠে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। এর ভূমির মালিক জেলা প্রশাসন। আর ব্যবস্থাপনায় জেলা পরিষদ। এই দো-টানায় চিড়িয়াখানার কোনো উন্নয়ন হচ্ছে না। সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি আলী আকবর মাসুম বলেন, ‘কুমিল্লার মতো বড় শহরের চিড়িয়াখানার এই বেহাল অবস্থা দুঃখজনক। চিড়িয়াখানার সংস্কার ও পশু-পাখি দিয়ে নতুন করে সাজানো সময়ের দাবি।’

লিজ গ্রহীতা রায়হান হাসানাত বলেন, ‘লিজ ও পশু-পাখির খাবার মিলিয়ে বছরে ১৯ লাখ টাকা খরচ। কিন্তু পশু-পাখি না থাকায় দর্শনার্থী তেমন আসছে না। এতে লোকসান গুনতে হবে।’

কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার ভৌমিক বলেন, ‘যুবরাজ সিংহটি মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, একটি সিংহ সাধারণত ১৪ বছর বাঁচে। যুবরাজের বর্তমান বয়স ১৮ বছর। এটি মূলত তার বাড়তি জীবনকাল অতিবাহিত করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘চিড়িয়াখানার মাটি ভরাট করেছি, দেয়াল নির্মাণ চলছে। কিছু দিনের মধ্যে কিছু পশু-পাখি আনা হবে। আশা করছি চিড়িয়াখানার উন্নয়নে দ্রুত কিছু পদক্ষেপ নিতে পারব।’

সর্বশেষ খবর