শুক্রবার, ৩ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

আতিকের জন্য চ্যালেঞ্জ ছানু বিএনপিতে হজরত আলী

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

আতিকের জন্য চ্যালেঞ্জ ছানু বিএনপিতে হজরত আলী

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে শেরপুর-১ (সদর) আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। শেরপুর সদর আসনে গত চার মেয়াদ টানা ২০ বছর ধরে এমপি শেরপুর কলেজের সাবেক ভিপি, সংসদের হুইপ ও দলের জেলা সভাপতি আতিউর রহমান আতিক।

১৯৯৬ সালে সিনিয়র তিন নেতার মনোনয়ন কাড়াকাড়িতে অনেকটা নাটকীয়তায় আতিক প্রথম দলীয় মনোনয়ন পেয়ে যান। এরপর তার আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইতিপূর্বে বিনা বাধায় এই নেতা মনোনয়ন পেলেও আগামী নির্বাচনে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছেন ছানুয়ার হোসেন ছানু। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় পরিবহন মলিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও শেরপুর পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এই দুই নেতাই ব্যাপক গণ-সংযোগ করছেন।

জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর থেকেই এ আসনে মনোনয়ন যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ছানুর সঙ্গে  আছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হুইপ আতিকের এক সময়ের ডান হাত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমান। দুই পক্ষই উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে বড়সড় শোডাউন করেছেন। শেরপুরের শ্রমিক নেতা মরহুম সেলিম রেজার কন্যা সংসদের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি গোপালগঞ্জের বধূ শিল্পপতি ফাতেমাতুজ্জহুরা শ্যামলীও সদর থেকে মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। বাবার পরিচিতি ও মহিলা এমপি হওয়ার সুবাদে এলাকায় তার পরিচিতি রয়েছে বেশ। সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা সাবেক গভর্নর মরহুম আনিসুর রহমানের ভাতিজা প্রকৌশলী মাহবুবুল আলম মনোনয়ন চাইবেন। আরও মনোনয়ন চাইবেন মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সামসুন্নাহার কামাল। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে এ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা জাসদ সভাপতি মনিরুল ইসলাম ১৪ দলীয় জোটের প্রার্থী হতে চান।  স্বাধীনতার পর বিএনপি ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে বিশিষ্ট কলামিস্ট সাংবাদিক খন্দকার আবদুল হামিদের মাধ্যমে (১৯৯৬ সালের ১৫  ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাদে) একবার জয়ের স্বাদ পেয়েছিল। নানা সংকটে ৩৭ বছর ধরে সদর আসনটি বিএনপির হাতছাড়া। এখানে প্রার্থী হিসেবে জেলার সাধারণ সম্পাদক শিল্পপতি হজরত আলী বেশ আলোচনায় আছেন। গণসংযোগ ও দলের পেছনে খরচ এই নেতাই করে যাচ্ছেন। ঢাকায় অবস্থানের কারণে কেন্দ্রেও তার রয়েছে নিয়মিত যোগাযোগ। অবস্থাদৃষ্টে এই শিল্পপতিই এখন পর্যন্ত বিএনপির প্রার্থী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সাবেক সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ মনোনয়ন চাইবেন বলে মাঝে মধ্যে এলাকায় এসে জানান দেন। জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। এখানে পরপর দুইবার জোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. কামারুজ্জামান। তার ছেলে ওয়াফি মনোনয়ন চাইবেন এমন কথা শোনা গেলেও এলাকায় তার আসা-যাওয়া নেই। শেরপুর সদরে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন চরাঞ্চলের দাপুটে নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইলিয়াছ উদ্দিন। তিন বারের সাবেক এমপি শাহ রফিকুল বারী চৌধুরী জাপা (মঞ্জু) তে আছেন। তবে যে কোনো বড় দল থেকে তিনি মনোনয়ন চাইবেন এমন আলোচনা বাজারে আছে। বড় কোনো দল থেকে রফিক চৌধুরী মনোনয়ন পেলে তিনি অন্য প্রার্থীদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারেন। তবে ভোটারদের অভিমত আওয়ামী লীগে দলাদলি আর বিএনপিতে যতই সমস্যা থাকুক, ভোটের রাজনীতিতে শেষ পর্যন্ত নৌকা-ধানের শীষেই মানুষের শেষ ভরসা।

সর্বশেষ খবর