শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বিদ্রোহী না বসলে বহিষ্কার বললেন হাওলাদার

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাকে বহিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। তবে তিনি আশাবাদী যে আসিফ শেষতক পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে নেবেন এবং দলের প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফার পক্ষে কাজ করবেন। আসিফ হলেন এইচ এম এরশাদের ভাইপো। হাওলাদার গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রংপুর সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গ ছাড়াও দেশের  বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নিজের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু এরশাদের বাড়ি রংপুরে। এ জেলা এরশাদের ঘাঁটি। রংপুরে এরশাদের উন্নয়নের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আর এবার দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে, তাই নেতা-কর্মীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। কারণ পুরো রংপুরেই লাঙ্গল প্রতীকের আবেদন আছে। আর মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা মানবদরদি, সৎ, নিষ্ঠাবান বেশ জনপ্রিয় নেতা। তিনি সব সময় মানুষের পাশে থাকেন। সুষ্ঠু ভোট হলে মোস্তফার বিজয় নিশ্চিত। আর রংপুর সিটি নির্বাচনে জেতার লক্ষ্যে আমরা সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছি। সম্প্রতি পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে রংপুরে গিয়েছিলাম। দলমত নির্বিশেষে সবাই বলেছেন মানুষ এরশাদ জমানায় ফিরে যেতে চায়। আর আমরা সংগঠনকে সেভাবেই সাজাচ্ছি। তিনি বলেন, রংপুর সিটি নির্বাচন নির্বাচন কমিশনের জন্য একটি পরীক্ষা। এ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হলে ইসির প্রতি জনগণের আস্থা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতার প্রমাণ দিতে হবে।

প্রথম পর্যায়ে সেই প্রমাণ নিতে চাই আসন্ন রংপুর সিটি নির্বাচনে।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী জাতীয় নির্বাচন হলে তা কতটা নিরপেক্ষ হতে পারে জানতে চাইলে হাওলাদার বলেন, নির্বাচনের এখনো অনেক বাকি। তিনি আশা করেন, শেষ পর্যন্ত সুষ্ঠু সমাধান একটা হবে। নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনও হবে। এক্ষেত্রে সরকার কতটা ছাড় দেয় আর বিএনপি কতটা আদায় করতে পারে এটাই দেখার বিষয়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর অধীনে নির্বাচন হওয়ার কারণে গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। এবারও অংশ না নিলে কী ক্ষতি হতে পারে তা বিএনপির অজানা নয়।

জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক অবস্থা কেমন? রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, পার্টির তৎপরতা থেমে নেই। মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি রয়েছে— এ রকম প্রতিটি জেলায় তিনি এবং পার্টির নেতা-কর্মীরা যাচ্ছেন। যেসব জেলায় সাংগঠনিক অবস্থা কিছুটা দুর্বল তা কাটিয়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনে সম্মিলিত জাতীয় জোটের অধীনে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়া হবে। আগামী এক জানুয়ারি রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মহাসমাবেশ হবে। সেখানে পল্লীবন্ধু এরশাদ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। এ মহাসমাবেশ দেখে দেশবাসী বুঝবে সরকার গঠনের জন্য জাতীয় পার্টি প্রস্তত, ইনশাল্লাহ।

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, প্রতিনিয়ত দেশের বিশিষ্টজনেরা এইচ এম এরশাদের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করছেন। নির্বাচন ঘনিয়ে আসলে আরও অনেক ব্যক্তি ও দল আমাদের জোটে যোগ দেবে। অনেক দল আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এখনই তাদের নাম প্রকাশ করতে চাই না। অনেক চমক আছে অপেক্ষা করুন।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা আমাদের জীবন অনিরাপদ করে তোলে। আশা করব, আমাদের চৌকস আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনা দূর করে পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে শান্তি বহাল রাখবে।

সর্বশেষ খবর