জামালপুরের শিল্প শহর হিসেবে পরিচিত সরিষাবাড়ী উপজেলা নিয়ে গঠিত জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন প্রার্থীরা। ফরিদুল কবির তালুকদারকে দলের এ আসনে একক প্রার্থী করার মানসিকতায় বিএনপি অনেকটা নির্ভার। আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী দলের মনোনয়ন পেতে মাঠে নেমেছেন। এলাকায় গণসংযোগের পাশাপাশি তারা জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে লবিং করে চলেছেন। দশম সংসদ নির্বাচনের সময় জোট রাজনীতির স্বার্থে এ আসনটি আওয়ামী লীগ ছেড়ে দিয়েছিল জাতীয় পার্টিকে। এ সুযোগ নিয়ে বিএনএফ প্রার্থী মোস্তফা বাবুলকে হারিয়ে রাজনীতিতে অনেকটা ‘অখ্যাত’ জাতীয় পার্টির মামুনুর রশিদ জোয়ার্দার খোলা মাঠে এমপি হয়ে যান। তার বিরুদ্ধে টিআর, কাবিখা লুটপাটসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে জাতীয় পার্টিসহ জোটের শরিক দলগুলোর। হয়নি দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন। যে কারণে এবার আওয়ামী লীগ এ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দেবে না কোনোভাবেই। এখানে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী একাধিক প্রার্থী মাঠে রয়েছেন। তবে তাদের মধ্যে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ঢাকা তেজগাঁও কলেজের অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ। জামালপুর-৪ আসনে এবার শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবেই মাঠে নেমেছেন অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ। এলাকায় সৎ মানুষ হিসেবে পরিচিত অধ্যক্ষ রশিদ সরিষাবাড়ীর প্রতিটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড চষে বেড়াচ্ছেন। ইতিমধ্যে তার পক্ষে বিশাল শোডাউন হয়েছে। তার সমর্থকরা বলছেন, তিনি নেতা-কর্মী ও এলাকার মানুষের পাশে থাকেন। তিনি অনেক মানুষের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। অনেক দরিদ্র পরিবারের সন্তানের পড়াশোনার সুযোগ করে দিয়েছেন। তারা মনে করেন ‘ক্লিন’ ইমেজের কারণে প্রার্থী হিসেবে তিনি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ ছাড়াও সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা দলের মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা করছেন। বাদশা এক সময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। ছাত্রলীগ দিয়ে রাজনীতি শুরু করে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়েছেন। মনোনয়ন পেতে তিনি তৃণমূল পর্যায়ে গণসংযোগ চালাচ্ছেন। গণসংযোগ চালাচ্ছেন সাবেক এমপি ডা. মুরাদ হাসানও। এ ছাড়া মনোনয়ন লড়াইয়ে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল, আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক লুত্ফর রহমান। এ আসনে জাসদের (আম্বিয়া) প্রার্থী হিসেবে তৃণমূলে কাজ করছেন মুক্তিযোদ্ধা এম এল ফারুক। আসন ভাগাভাগিতে ১৪ দলের শরিক হিসেবে মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন তিনি। শিল্প ও বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এ আসনটিতে আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদে যারাই এমপি হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। এবার এ আসনে একজন স্বচ্ছ ব্যক্তিকে প্রার্থী করবে আওয়ামী লীগ— এমনটাই আশা করছেন দলের নেতা-কর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষ। এ আসনে বিএনপি থেকে জেলা বিএনপি সভাপতি বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম চষে বেড়াচ্ছেন নির্বাচনী মাঠ। একক প্রার্থী হিসেবে তিনি অনেকটা নির্ভার রয়েছেন। এ আসনে বিএনএফের প্রার্থী হিসেবে সাংবাদিক মোস্তফা বাবুল তৃণমূলে কাজ করে যাচ্ছেন।