মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ভুল চিকিৎসা

এক ছেলের পর মারা গেল আরেক ছেলেও

নিজস্ব প্রতিবেদক

বড় ছেলে ইমন আর ছোট ছেলে রহমান। রহমানের বয়স তিন মাস। ভুল চিকিৎসার কারণে প্রথমে মারা যায় তিন বছরের ইমন, এর ৭ ঘণ্টা পর মারা যায় রহমান। এই মর্মান্তিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনাটি গতকাল ঘটেছে রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে। একই দিনে দুই পুত্রকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন মা ইয়াসমিন। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

এদিকে দুই পুত্রের মৃত্যুর খবর শুনে কাতার প্রবাসী পিতা জাহাঙ্গীর আলম পাগলপ্রায়। ঘটনার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে ডাক্তার উজ্জ্বল দাসের ভুল চিকিৎসাকে দায়ী করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে মারা যায় শিশু ইমন। তার দাফন কাজ শেষ হতে না হতেই মারা যায় রহমান। কামাল উদ্দিন নামে ইয়াসমিনের মামা অভিযোগ করেন, ইমন-রহমানের বাবা জাহাঙ্গীর আলম কাতার প্রবাসী। তারা কামরাঙ্গীরচরের সিলেটিবাজার জাফরের গলির একটি বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকত। দেড়-দুই মাস আগে জ্বরে আক্রান্ত হয় ইমন। কয়েক দিন পর পর জ্বর আসে আর চলে যায়। এ পরিস্থিতিতে হাজারীবাগে বিজিবির ১ নম্বর গেটে টাউন ফার্মেসিতে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। সেখানেই ডা. উজ্জ্বল দাসের চেম্বার। দেখেশুনে ইমনের জন্য এক মাসের ওষুধ লিখে দেন চিকিৎসক। তবুও সারেনি জ্বর। সর্বশেষ গত ১৬ নভেম্বর আবার তাকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হয়। তিনি আগের লিখে দেওয়া ওষুধগুলো নিয়মিত খাওয়ানোর পরামর্শ দেন। এর আগে ৫ নভেম্বর সর্দি-কাশিতে আক্রান্ত হলে একই চিকিৎসকের কাছে রহমানকে দেখানো হয়েছিল। মামা আরও জানান, ডা. উজ্জ্বল দাসের অধীনে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় গতকাল সকালে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করে ইমন। এরপর প্রথমে তাকে কামরাঙ্গীরচরের রিভারভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হলে চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন। ইমনের দাফন শেষে বেলা ৩টার দিকে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় রহমানের। তাকেও নিয়ে যাওয়া হয় রিভারভিউতে। সেখান থেকে স্থানীয় শিকদার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় টাউন ফার্মেসিতে। সেখানে কর্মরত রাজু নামে এক ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে ডা. উজ্জ্বল দাসের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেন। মোবাইলে একাধিকবার ডা. উজ্জ্বলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

 

সর্বশেষ খবর