মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
২০ মাসেও অধরা খুনিরা

তনুর পরিবারকে সিআইডি কার্যালয়ে যেতে ফের চিঠি

কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর খুনিরা ২০ মাসেও শনাক্ত হয়নি। দীর্ঘ এ সময়ে মামলার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতিও নেই। খুনি চিহ্নিত না হওয়ায় ক্ষুব্ধ তনুর পরিবার। এদিকে আগামীকাল ঢাকায় সিআইডি কার্যালয় অফিসে যাওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে তনুর পরিবারকে। গতকাল রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তনুর মা আনোয়ারা বেগম।

গত বছরের ২০ মার্চ সন্ধ্যায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরে একটি বাসায় টিউশনি করে ফেরার পথে খুন হন তনু। সেই রাতে বাসার অদূরে সেনানিবাসের ভিতর একটি জঙ্গলে তনুর মরদেহ উদ্ধার হয়। পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী ইয়ার হোসেন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর গত বছরের পয়লা এপ্রিল থেকে মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। তনুর দুই দফা ময়নাতদন্তে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর সুস্পষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি। শেষ ভরসা ছিল ডিএনএ রিপোর্ট। গত বছরের মে মাসে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেওয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজন পুরুষের শুক্রাণুর অস্তিতের কথা গণমাধ্যমকে জানায়। পরে সন্দেহভাজনদের ডিএনএ ম্যাচিং করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে কিনা— এ নিয়েও সিআইডি কিছু বলছে না। ডিএনএ পরীক্ষায় তিনজনের শুক্রাণু পেলেও ২০ মাসেও এ পর্যন্ত ডিএনএ ম্যাচ করে ঘাতকদের শনাক্ত করতে না পারায় মেয়ে হত্যার বিচার নিয়ে তনুর পরিবারসহ নানা মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে।

তবে সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২৫ অক্টোবর থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা আসামি। তবে সিআইডির পক্ষ থেকে ওই তিনজনের নাম জানানো হয়নি। এদিকে দীর্ঘ দিনেও এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করতে না পারায় সচেতন মহলে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

গণজাগরণ মঞ্চ কুমিল্লার সংগঠক খায়রুল আলম রায়হান জানান, দীর্ঘদিন মামলাটি সিআইডিতে পড়ে আছে। মামলার কোনো অগ্রগতি নেই। আমরা খুনিদের চিহ্নিত করে শাস্তির দাবি জানাই।

তনুর মা আনোয়ারা বেগম বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে দাবি করেন, সার্জেন্ট জাহিদ আর তার স্ত্রীকে আইনের আওতায় আনলে হত্যার ঘটনা বেরিয়ে আসবে। কারণ তাদের বাসায় টিউশনি করতে যাওয়ার পর জঙ্গলে তনুর মরদেহ পাওয়া যায়। তিনি মৃত্যুর আগে মেয়ে হত্যার বিচার দেখে যেতে চান। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আসামিদের আইনের আওতায় না এনে বারবার আমাদের কেন হয়রানি করা হচ্ছে। সোমবার (গতকাল) কুমিল্লা সিআইডি অফিস থেকে একটি চিঠি এসেছে। আমার স্বামী, দুই ছেলে ও তনুর চাচাতো বোনকে নিয়ে ঢাকা যেতে বলেছে সিআইডি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি কুমিল্লার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দীন আহমেদ বরাবরের মতো বলেছেন, তনু হত্যার সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করতে সিআইডি কাজ করে যাচ্ছে। তদন্তের বিষয়ে তিনি বিস্তারিত কিছু বলতে চাননি।

সর্বশেষ খবর