বুধবার, ২৯ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা
ইসিকে বিএনপির চিঠি

ছাত্রদল শ্রমিকদল অঙ্গ সংগঠন নয়

গোলাম রাব্বানী

ছাত্রদল ও শ্রমিক দল বিএনপির অঙ্গসংগঠন নয় বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে জানিয়েছে দলটি। বিএনপির অঙ্গসংগঠন থেকে ২০০৯ সালে এ দুই সংগঠনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তখন থেকেই সংগঠন দুটি নিজস্ব স্বকীয়তায় সহযোগী সংগঠন হিসেবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত করছে বলেও ইসিকে জানিয়েছে তারা। যদিও ২০১৪ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি অনুমোদন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর মূল দলের শীর্ষ নেতার অনুমোদনে ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন করাটা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। উল্লেখ্য, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিতে ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিকদের নিয়ে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন থাকায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) মেনে নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন করা হচ্ছে উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশনকে এই প্রতিবেদন দিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২২ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছেন। নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালন করা হচ্ছে কিনা— তা জানতে চেয়ে ইসির চিঠির জবাবে ইসিকে এ তথ্য জানান তিনি। ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু করে নির্বাচন কমিশন। তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন জানান, নিবন্ধন শর্তে আইনে বলা হয়— ছাত্র ও পেশাজীবীদের নিয়ে কোনো অঙ্গসংগঠন রাখা যাবে না। আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ দলগুলো তাতেই রাজি হলো, গঠনতন্ত্রও সংশোধন করল। আইনও হলো, গঠনতন্ত্রও ?ঠিক করল দলগুলো। কিন্তু আবার সহযোগী হিসেবে ছাত্র সংগঠনকে রেখেও দিচ্ছে তারা। ওই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে একই কাজ করে চলেছে। নির্বাচন কমিশন বিষয়গুলো নিয়ে দলগুলোর কাছে ব্যাখ্যাও চাইতে পারে, বলেন ২০১২ সালে বিদায় নেওয়া এই নির্বাচন কমিশনার। রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ইতিবাচক’ চর্চার আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন বলেন, আইন প্রয়োগ না হলে বিধান থেকে লাভ কী! আমরা অঙ্গ-সহযোগী হিসেবে নিষেধাজ্ঞা করেছি, পরে সংশোধন করে সহযোগী করে রাখা যাচ্ছে। যা-ই থাকুক, শর্ত পালনে দলগুলোকেও সহায়তা করতে হবে।

নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, আরপিও অনুযায়ী ছাত্র সংগঠনের কমিটি মূল দলের নেতা অনুমোদন করা মানেই তা বিধিলঙ্ঘন। একদিকে বিধি মানার কথা বলবেন, কাগজে-কলমে ঠিক থাকলেও বাস্তবে নির্বাচনী আইনের সাংঘর্ষিক অবস্থানে রয়েছে অধিকাংশ দল। নিবন্ধন শর্ত প্রতিপালনে ইসি এককভাবে অনেক কিছুই পারবে না, দলগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। ২০০৮ সালে নিবন্ধন চালুর পর গত কমিশন এ নিয়ে কোনো তদারকি রাখেনি। বর্তমান ইসি খোঁজ নিচ্ছে, এটাও একটা অগ্রগতি। যেহেতু নিবন্ধনের প্রথা চালু হয়েছে, সে ক্ষেত্রে বিধিগুলো প্রতিপালনে দলগুলোকেও সময় দিতে হবে ইসির। একটু সময় দিয়ে হলেও বা তাগিদ দিয়ে নিবন্ধন শর্ত পালনে বাধ্য করাতে হবে।

১৫% নারী সবখানে : ইসিকে বিএনপি মহাসচিব জানান, আরপিওর শর্তাদি প্রতিপালন করা হচ্ছে। দলের সব স্তরে ১৫% মহিলা সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। ২০০৯ সালের বিএনপির পঞ্চম কাউন্সিলে ছাত্রদল ও শ্রমিক দলকে অঙ্গসংগঠন থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বিস্তারিত প্রতিবেদন জমা দিতে কিছু দিন সময় চেয়ে বিএনপি মহাসচিব নির্ধারিত সময়ে প্রতিবেদন না দিতে পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

সর্বশেষ খবর