সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

চার দিনে নতুন বই ৫৮৬টি

মোস্তফা মতিহার

চার দিনে নতুন বই ৫৮৬টি

অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৮ এর চার দিনে মোট ৫৮৬টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। প্রকাশনার সঙ্গে বরাবরের মতো এবারের মেলায়ও বিক্রির ক্ষেত্রে অসামঞ্জস্যতা ছিল। তবে ‘মানসম্পন্ন বই কম প্রকাশ হচ্ছে বলেই  প্রকাশনা ও বিক্রির মধ্যে ব্যাপক অসামঞ্জস্য রয়েছে’ বলে মনে করেন তাম্রলিপির স্বত্বাধিকারী এ কে এম তারিকুল ইসলাম রনি। মানসম্পন্ন বইয়ের সংখ্যা না বাড়লে মেলার গড় বিক্রি বাড়বে না বলে জানান এ প্রকাশক।

গতকাল মেলার চতুর্থ দিনে বড়দের বইয়ের তুলনায় শিশুদের বই বেশি বিক্রি হয়েছে। শিশু প্রহর না থাকলেও এদিনও বাবা-মায়ের হাত ধরে বই কিনতে দেখা গেছে শিশুদের। খালি হাতে প্রবেশ করে বই হাতে নিয়েই গতকাল মেলা প্রাঙ্গণের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ত্যাগ করেছে ছোট্ট সোনামণিরা।

নতুন বই : বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের তথ্য মতে, গতকাল মেলায় নতুন বই এসেছে ১১১টি। এর মধ্যে গল্পের বই ৯টি, উপন্যাস ১৯টি, প্রবন্ধ ৮টি, কাব্যগ্রন্থ ২৬টি, ভ্রমণ ৬টি, ইতিহাস ৩টি, চিকিৎসা স্বাস্থ্য ১টি, ছড়া ৪টি, শিশুতোষ ৫টি, ধর্মীয় ২টি, জীবনী ২টি, অনুবাদ ১টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, সায়েন্সফিকশন ১টি, বিজ্ঞান ৩টি, নাটক ৪টি ও অন্যান্য। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বই হলো প্রথমা প্রকাশ থেকে বের করা সৈয়দ আবুল মকসুদের ‘কাগমারী সম্মেলন’ (মওলানা ভাসানীর পূর্ববাংলার স্বাধিকার ও সম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রাম দ্বিতীয় মুদ্রণ, ৩৫০ টাকা)। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষা’ (বর্ষসেরা পুরস্কারপ্রাপ্ত বই, দ্বিতীয় সংস্করণ, ৬৫০ টাকা)। ‘স্যার ফিলিপ হার্টগ’ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য, দ্বিতীয় মুদ্রণ, ২২০ টাকা)। অবসর প্রকাশনী থেকে নির্মলেন্দু গুণের কাব্যগ্রন্থ ‘একটি সন্তানসম্ভবা পাখির গল্প’। অনন্যা এনেছে মহাদেব সাহার কাব্যগ্রন্থ ‘অনন্তের বাঁশি’। অনিন্দ্য এনেছে ইকবাল খন্দকারের ‘গলাকাটা গোয়েন্দা’। মূল মঞ্চ : গতকাল বিকালে গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘রণদা প্রসাদ সাহা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিভা মুত্সুদ্দি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রমণীমোহন দেবনাথ, হেনা সুলতানা এবং আজিজুর রহমান আজিজ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রফিকুল ইসলাম। প্রাবন্ধিক বলেন, রণদা প্রসাদ সাহা দানবীর এবং সমাজকর্মী হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। শিক্ষা বিস্তারে তাঁর প্রয়াস ব্যতিক্রমী এবং তৃণমূললগ্ন। নারী শিক্ষার প্রায়োগিকতায় তাঁর অবদান মৌলিক এবং সুদূরবিস্তৃৃত। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান স্থাপন, বিশেষত উন্নত চিকিৎসা-প্রতিষ্ঠান তৈরির মধ্য দিয়ে তিনি সমাজের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবার আধুনিক পরিসর নিশ্চিত করেছেন। আলোচকরা বলেন, উচ্চতর মূল্যবোধের অধিকারী রণদা প্রসাদ সাহার চরিত্রের ভিতরই বাঙালি মননের গুণাবলীসমূহ যথেষ্ট মাত্রায় ছিল আর সেটাই তাঁকে মানবসেবায় অনুরাগী করে তোলে। কষ্টসহিষ্ণুতা, সাহস ও কর্মনিষ্ঠাই ছিল তাঁর জীবনের পুঁজি। তিনি মানুষকে যা দিয়েছেন তা ভিক্ষা বা ঋণ হিসেবে নয়, বরং মানুষকে ভালোবেসে মানুষের প্রাপ্য হিসেবেই দিয়েছেন। তাঁর কর্মময় জীবন, নৈতিকতা, মানবপ্রেম ও আদর্শ আমাদের অনুপ্রাণিত করে। সভাপতির বক্তব্যে রফিকুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদ রণদা প্রসাদ সাহা স্বাধীন বাংলাদেশের নিত্যস্মরণীয় হয়ে থাকবেন তাঁর মানবসেবা, শিক্ষাব্রত এবং উদার-অসাম্প্রদায়িক চিন্তার জন্য।

 সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন নাদিরা বেগম, আজগর আলীম, অনিমা মুক্তি গোমেজ। গতকাল মেলার প্রবেশ দ্বার খোলা হয় বিকাল ৩টায় এবং দ্বার বন্ধ হয় রাত ৯টায়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর