সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেফতার

পুলিশি হামলা হানাদারদের নৃশংসতা মনে করিয়ে দেয় : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক

গত পাঁচ দিনে ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দিয়ে বেপরোয়াভাবে এই গ্রেফতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকাসহ সারা দেশে গোয়েন্দা পুলিশ আকস্মিকভাবে ঝাপটা মেরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের আটক করছে। শনিবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা চলাকালে এবং সভা শেষে বেরিয়ে যাওয়ার পর রাস্তা থেকে ৩৫ জনেরও বেশি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল দুপুরে দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ  সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন। রিজভী আহমেদ আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মামলার রায় প্রসঙ্গে বলেন, জাল নথিতে সাজানো ভুয়া মামলা দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হলে এ দেশের মানুষ কিছুতেই তা মেনে নেবে না। সত্যনিষ্ঠ, দৃঢ়চেতা, দেশ ও দলের প্রতি সহমর্মী বেগম খালেদা জিয়াকে তার দেশ ও জনগণ থেকে কেউ আলাদা করতে পারবে না। সব অশুভ অভিপ্রায় ব্যর্থ হয়ে যাবে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, এই স্বাধীন দেশে বিরোধী দলের ওপর পুলিশের উন্মত্ত হামলা মানুষকে সেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। তিনি বলেন, দেশের জনগণ কেন পুলিশকে আওয়ামী অপশাসন ঠেকানোর লাঠিয়াল বলে ভাববে! আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় পুলিশের নিরপেক্ষতা এখন জনগণের কাছে হাস্যকর জায়গায় গিয়ে ঠেকেছে। রিজভী আহমেদ বলেন, ‘দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে সুকৌশলে পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের চিন্তাভাবনা করা দরকার। জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দাঁড়ালে সুনাম নষ্টের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান ধসে যায়। তাই পুলিশ ভাইদের অনুরোধ করছি, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের উপাসক হবেন না।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, গণগ্রেফতার নয়, সন্ত্রাসী ধরা হচ্ছে। এর ফলে নাকি পুলিশের প্রতি মানুষের ভালোবাসা বাড়ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে চাই, দেশের বরেণ্য রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, ছাত্র, যুবক ও নারীসহ বিএনপি এবং বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মীদের ধরার জন্য চিরুনি অভিযান, আটক ও বাসায় বাসায় হামলার পরও তাদের প্রতি ভালোবাসা বাড়ছে? গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার কথা বাদই দিলাম। হায় সেলুকাস!’ তিনি বলেন, সরকারি দলের অঙ্গসংগঠনের ভূমিকা পালন করেছে বলেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুলিশের প্রতি মানুষের ভালোবাসার কথা বলছেন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন তো দৈনন্দিন ঘটনা। একটি অরাজনৈতিক ও দেশের স্বার্থের পক্ষের সংগঠন তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ-বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির মিছিলে পুলিশের উন্মত্ত হামলায় অধ্যাপক আনু মোহাম্মদের পা ভেঙে দেওয়াসহ অসংখ্য বরেণ্য ব্যক্তিকে গুরুতর আহত করা হয়। সেটিও কেউ ভুলে যায়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর