শুক্রবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা
ঐতিহ্য

জামাই ও মাছের কুড়িখাই মেলা

সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন, কিশোরগঞ্জ

জামাই ও মাছের কুড়িখাই মেলা

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে ঐতিহ্যবাহী জামাই ও মাছের কুড়িখাই মেলা জমে উঠেছে। প্রায় ৮০০ বছরের পুরনো এ মেলায়  দিন দিনই বাড়ছে মানুষের ভিড়। হজরত শাহ সামছুদ্দীন আউলিয়া সুলতানুল বোখারী (রহ.)-এর বার্ষিক ওরস উপলক্ষে কটিয়াদী উপজেলার কুড়িখাই নামক স্থানে প্রতিবছর মেলার আয়োজন করা হয়। মাঘ মাসের শেষ মঙ্গলবার শুরু হয়ে পক্ষকাল স্থায়ী হয় মেলা। মেলাটি এ অঞ্চলের সব শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের বড় উৎসবে পরিণত হয়েছে। মেলায় শিশুদের নানা ধরনের খেলনা ছাড়াও বড়দের নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীও পাওয়া যায়। মেলার প্রধান আকর্ষণ বড় মাছ। এলাকার রেওয়াজ অনুযায়ী নতুন জামাই মেলা থেকে মাছ কিনে শ্বশুর বাড়িতে যেতে হবে। মেলা থেকে মাছ না নিলে শ্বশুর বাড়িতে জামাইকে মাছ খেতে দেওয়া হবে না। মেলার সময় শ্বশুর বাড়ির লোকজন জামাইয়ের অপেক্ষায় থাকেন। কে কত বড় মাছ নিয়ে যাবেন, তা নিয়ে রীতিমতো জামাইদের মধ্যে প্রতিযোগিতা লেগে যায়।

শত শত বছরের এ রেওয়াজ এখনো চলছে। এ কারণে মেলাটি জামাই ও মাছের মেলা নামেও পরিচিত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা আত্মীয়-স্বজনরাও মেলা উপলক্ষে বেড়াতে আসেন। মূল মেলার আগে অনুষ্ঠিত হয় ফকিরি মেলা। ফকিরি মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ফকির-সন্নাসীরা আসেন। এ সময় ধর্মীয় সংগীতে মেলায় অন্যরকম আবহ সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানকে ছাপিয়ে কালের আবর্তনে কুড়িখাই মেলা সার্বজনীন উৎসবে রূপ নিয়েছে। মেলায় শিশু ও তরুণ-তরুণীদের জন্য রয়েছে নাগরদোলা, চরকিসহ নানা আয়োজন। রয়েছে মুখরোচক খাবারের পসরাও। শিশুদের নানা ধরনের খেলনা সামগ্রীসহ সংসারের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রও বিক্রি হচ্ছে মেলায়। বেচা কেনাও হচ্ছে দেদার। মেলার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান কেয়া বলেন, এটা শুধু ইসলাম ধর্মের অনুসারীদের মেলাই নয়, সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এ মেলায় অংশ নেন। প্রায় হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী এ মেলাকে ধরে রাখতে প্রশাসনিকভাবে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর