মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

হুমকি নেই তবু কাল থাকবে চার স্তরের নিরাপত্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, আগামীকাল ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় হামলা-নাশকতার সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। তবু ওই দিন শহীদ মিনার ও তার আশপাশে চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে নিরাপত্তাব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

দিনটি উপলক্ষে পুলিশের পাশাপাশি নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করেছে র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। তারা পোশাকের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নজরদারি বাড়িয়ে দিয়েছে। বসানো হয়েছে ঢাকার বিভিন্ন প্রবেশমুখে একাধিক তল্লাশি চৌকি। সেখানে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের গাড়ি ও দেহ তল্লাশি করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এনেক্স ভবনের সামনে বসানো হয়েছে র‌্যাব-পুলিশের অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম। গতকাল সকাল থেকে শহীদ মিনারের আশপাশে গাছ ও ভবনে একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করেছে পুলিশের সিসিটিভি ইউনিট। আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় শহীদ মিনার চত্বরের নিরাপত্তাব্যবস্থা দেখভাল করার জন্য এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা রয়েছে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের। পরিদর্শন শেষে তিনি সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করবেন বলেও র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।  

গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটি উৎসবমুখর ও ভাবগাম্ভীর্যভাবে পালনে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাবলয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিগত বছরের চেয়ে এই নিরাপত্তা ভালো থাকার কারণে অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে মহান দিনটি পালিত হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। আছাদুজ্জামান মিয়া আরও বলেন, সাদা পোশাকে, পোশাকে, সিসি ক্যামেরা ও আর্চওয়ে এবং শহীদ মিনারের বাইরে টহল পুলিশের প্যাট্রোলিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। শহীদ মিনার ও আশপাশের এলাকায় ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করে সুইপিং বা নিরাপত্তা তল্লাশি করা হবে। শাহবাগ-নীলক্ষেত মোড়ে বেষ্টনী দেওয়া হবে। এসব এলাকায় ভ্রাম্যমাণ দোকান ও হকার বসতে দেওয়া হবে না। আর শহীদ মিনারে আগত দর্শনার্থীদের অবশ্যই একাধিক আর্চওয়ের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। তবে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ছাড়া সব ভিআইপিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠে গাড়ি পার্কিং করে পায়ে হেঁটে শহীদ মিনারে আসতে হবে। তিনি বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে শহীদ মিনার চত্বরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ওই সময় থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দুপুর ২টা পর্যন্ত শহীদ মিনারের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ থাকবে। ভিভিআইপি ছাড়া শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে আসা সাধারণদের ওয়ানওয়ে অর্থাৎ পলাশী হয়ে জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়েই প্রবেশ করতে হবে। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা কাউকে করতে দেওয়া হবে না। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী, ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার শাহাব উদ্দিন, কাউন্টার টেররিজমের প্রধান মনিরুল ইসলাম, যুগ্ম কমিশনার মফিজ উদ্দিন আহমেদ ও কৃষ্ণপদ রায়। আজিমপুর কবরস্থান যাওয়ার রাস্তা : পল্টন এলাকা থেকে যেতে হলে আবদুল গণি সড়ক, তোপখানা সড়ক এবং পুরাতন হাই কোর্টের সামনের রাস্তা দিয়ে দোয়েল চত্বর ক্রসিং থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সড়ক হয়ে টিএসসি ক্রসিং থেকে নীলক্ষেত ক্রসিং এবং নিউমার্কেট ক্রসিং হতে পিলখানা সড়ক দিয়ে কবরস্থানের ১ নম্বর গেট। পুরান ঢাকা এলাকা থেকে যেতে হলে দেওয়ান বাজার সড়ক কিংবা আজিমপুর সড়ক ব্যবহার করে নিউমার্কেট এলাকা থেকে ১ নম্বর গেটে। ঢাকা মেডিকেল ও বুয়েট এলাকা থেকে যেতে হলে দোয়েল চত্বর ক্রসিং ব্যবহার করতে হবে। আজিমপুর কবরস্থান থেকে শহীদ মিনার যাওয়ার রাস্তা : আজিমপুর কবরস্থানের মূল গেট থেকে আজিমপুর সড়ক, আজিমপুর বেবী আইসক্রিম মোড় হয়ে পলাশী ক্রসিং, এসএম হল এবং জগন্নাথ হলের সামনের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে। এ ছাড়া পুরাতন রেলওয়ে হাসপাতাল সড়ক দিয়ে টিএসসির মোড় হয়ে নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ি হয়ে পলাশী ক্রসিং দিয়ে শহীদ মিনার যাওয়া যাবে। ডাইভারশন : ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৫টা থেকে সায়েন্সল্যাব হতে নিউমার্কেট ক্রসিং, কাঁটাবন ক্রসিং হতে নীলক্ষেত ক্রসিং এবং ফুলবাড়িয়া ক্রসিং হতে চানখাঁরপুল ক্রসিং পর্যন্ত সব যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকবে।  যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ : শহীদ মিনারে প্রবেশে পুলিশের পক্ষ থেকে যেসব রুট উল্লেখ করা হয়েছে সেসব রাস্তায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামীকাল বুধবার বেলা ২টা পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকবে। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকার ছাড়া ওই এলাকায় ভিভিআইপি ব্যতীত অন্য কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না।

 

সর্বশেষ খবর