শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো উত্তেজনা

ছাত্রলীগের একাংশের আলটিমেটাম, তদন্ত কমিটি, সাংবাদিকদের প্রতিবাদ সমাবেশ

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনায় দোষীদের আইনগত ও একাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রবিবার পর্যন্ত চবির উপাচার্যকে সময় বেঁধে দিয়েছে চবি ছাত্রলীগের একাংশ। একইভাবে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) উদ্যোগে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দোষীদের বিরুদ্ধে ২৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া না হলে ২৭ ফেব্রুয়ারি ভিসির পদত্যাগ ও কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সমাবেশে বক্তারা জানান। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) প্রতিনিধি জানান, চবি শাখা ছাত্রলীগের একাংশের অবরোধ চলাকালে ১৪টি বাস, গণমাধ্যমকর্মীদের গাড়ি, প্রক্টর কার্যালয়ে ভাঙচুর ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করার দাবি তুলেছেন চবির একাংশের নেতারা।

এ আলটিমেটামের বিষয়টি নিশ্চিত করে চবি ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচ এম ফজলে রাব্বী সুজন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি বাস, প্রক্টর কার্যালয়ে ভাঙচুর, সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের          গাড়ি ভাঙচুর, বেশ কয়েকটি বিভাগের ক্লাসরুম ভাঙচুরের ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীদের খুঁজে বের করে আইনানুগ ও একাডেমিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে রবিবার পর্যন্ত উপাচার্যকে আলটিমেটাম দিয়েছি।’ বিবদমান এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। অন্য পক্ষ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান নওফেলের (সাবেক মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে) অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। ছাত্রলীগের একাংশের ভাঙচুরের ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. সফিউল আলমকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন আইন অনুষদের ডিন প্রফেসর আবু নোমান ও সহকারী প্রক্টর ফণীভূষণ। অন্যদিকে জীববিজ্ঞান অনুষদের টেন্ডার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমস্যা চলছে। এ টেন্ডারের কাজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই হুমকি দিয়ে আসছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ফজলকে। অফিসে ঢুকতে নিষেধ করে হুমকি-ধমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় জাহাঙ্গীর ফজলের টেবিলের ফাইলপত্র ফেলে দেন তারা। হুমকিদাতারা নিজেদের সাবেক ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এম এ খালেদের অনুসারী বলে দাবি করেন। গতকাল দুপুরের দিকে ১০-১২ জনের একটি দল হঠাৎ প্রকৌশল দফতরে ঢুকে ফাইলপত্র তছনছ করে এবং বউ-বাচ্চার মায়া থাকলে অফিসে যেন আর না আসে বলে হুমকি দেয়। টেন্ডারের কাজ কেন তাদের দেওয়া হলো না, এ নিয়ে হুমকি প্রদান করে। জাহাঙ্গীর ফজল অভিযোগ করে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে তারা আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে কাজের বিষয়সহ নানা কারণে। তবে কে কাজ পাবে, না পাবে এটা আমার কোনো সিদ্ধান্ত নয়।’ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কামরুল হুদা বলেন, ‘এ ঘটনায় মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে এর ভিত্তিতে আমরা ব্যবস্থা নেব।’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরীর পদত্যাগ দাবিতে ছাত্রলীগের একাংশের অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪টি গাড়ি ভাঙচুরসহ বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়। এ ঘটনায় সিনিয়র নিরাপত্তা কর্মকর্তা মো. গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে বুধবার রাতে হাটহাজারী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করেন।

সর্বশেষ খবর