শিরোনাম
শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাবার অ্যাসিড হামলা থেকে বেঁচে ফেরার ১৭ বছর পর আত্মহত্যা

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

জন্মের ছয় মাসের মাথায় বাবলীকে অ্যাসিড পান করিয়ে হত্যা করতে চেয়েছিলেন বাবা। এর ১৭ বছর পর বুধবার রাতে অবশেষে আত্মহত্যা করলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী সেই মেহিয়া আক্তার বাবলী।

বাবার সেই অ্যাসিড আক্রমণ থেকে শেষ পর্যন্ত বেঁচে গিয়েছিলেন বাবলী। তবে শারীরিকভাবে দারুণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন।   কথা বলতেও পারতেন না ঠিকমতো। তবে নানা মানুষের সহায়তায় ভর্তি হতে পেরেছিলেন টাঙ্গাইলের নামকরা একটি স্কুলে। বাবলীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়ার ঘটনা এক সময় মানুষ জেনেছিল গণমাধ্যমের কল্যাণে। আলোড়ন তুলেছিল ওই ঘটনা। সে সময় থেকে পেশাগত কারণে বাবলীর পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এমন এক ব্যক্তি জানিয়েছেন বাবলীর জীবনের কাহিনী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ব্যক্তি বলেন, কন্যাসন্তান হওয়ার তথ্য জেনে জন্মের আগে থেকেই বাবলীর মাকে গর্ভপাত করার জন্য চাপপ্রয়োগ করতেন বাবলীর বাবা। তিনি বলেন, কন্যাসন্তান হিসেবে জন্ম হওয়ার ছয় মাসের মাথায় অ্যাসিড দিয়ে বাবলীকে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। ওই সময় এ নিয়ে মামলা হলে কিছুদিন পলাতক থাকেন বাবলীর বাবা। কিন্তু পরে ওই মামলার আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। বাবলী এবং তার মা এরপর আর তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি। অ্যাসিড হামলায় ওই সময় বাবলীর একটি কান নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় গলা, জিহ্বা ও মুখ। ওই ব্যক্তি জানান, বাংলাদেশ অ্যাসিড সারভাইভারস ফাউন্ডেশনের শিক্ষাবৃত্তির সহায়তায় পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছিলেন বাবলী। শারীরিক বিকলঙ্গতার জন্য প্রায়ই অন্য সহপাঠীদের বিদ্রূপের শিকার হতে হতো তাকে। মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মিজানুল হক জানান, ভারতেশ্বরী হোমসের ছাত্রীনিবাসে থেকে পড়াশোনা করতেন বাবলী।

তবে আট-দশ মাস আগে শৃঙ্খলাজনিত কারণে তাকে ছাত্রীনিবাস থেকে বহিষ্কার করা হয়।

বাবলীর মা পারুল বেগম জানান, বহিষ্কার হওয়ায় ভারতেশ্বরী হোমসের একজন শিক্ষার্থী ও তার মায়ের সঙ্গে মির্জাপুরে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন বাবলী। বাবলীকে সেই শিক্ষার্থী ও তার মা মৌখিকভাবে তিরস্কার করতেন বলে জানান পারুল বেগম।

পুলিশ বলছে, তাদের ধারণা বাবলী আত্মহত্যা করেছেন। তবে কেন এ ঘটনা ঘটেছে, ময়নাতদন্তের পর তা খতিয়ে দেখা হবে।

সর্বশেষ খবর