শিরোনাম
সোমবার, ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

কদর বাড়ছে ইসলামী দলের

ভোটের হাওয়া

ঝর্ণা মনি

কদর বাড়ছে ইসলামী দলের

ভোটের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ধর্মভিত্তিক ছোট ছোট রাজনৈতিক দল। তাদের সঙ্গে পেতে প্রধান প্রধান দলের মধ্যে চলছে নীরব প্রতিযোগিতা। সাংবিধানিক বিধিনিষেধ সত্ত্বেও ভোটের মাঠে সুবিধা পাওয়ার জন্যই এ ধরনের দলকে কাছে টানতে সচেষ্ট বড় দলগুলো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসলামী দলগুলোকে তোয়াজ করার পুরনো কৌশল নিয়েছে তারা। জোট শরিকদের ধরে রাখার পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, বিএনপি এমনকি জাতীয় পার্টিও— কে কাকে জোটে ভেড়াতে পারে সেই লড়াইয়ে নেমেছে। নিয়মিত বৈঠক চলছে ইসলামী দল এবং সংগঠনের বড় নেতাদের সঙ্গে। দেশে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ১১টি ইসলামী দল। এর বাইরে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন বাতিল করায় এ দলটি এখন ভিন্ন কৌশলে তৎপর। ২০-দলীয় জোটে আরও ৪টি নিবন্ধিত ইসলামী দল রয়েছে— খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট (একাংশ) ও ইসলামিক পার্টি (একাংশ)। তারাও জোটগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটেও রয়েছে ইসলামী দল বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশন। এ দলটি জোটগতভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। নতুন করে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (একাংশ), নেজামে ইসলাম পার্টি, গণতান্ত্রিক ইসলামিক মুভমেন্ট, বাংলাদেশ আঞ্জুমানে আল ইসলাহ, বাংলাদেশ ইসলামিক গাজী, ইনসানিয়া ইসলাম, বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি।

জানা গেছে, সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শরিক দলগুলোর আপত্তি সত্ত্বেও হেফাজতে ইসলামসহ বেশ কিছু ধর্মভিত্তিক ইসলামী দল ও সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছে আওয়ামী লীগ। তরীকত ফেডারেশন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটে দীর্ঘদিন ধরেই আছে। আরেক ইসলামী দল জাকের পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সখ্য পুরনো। এখন নতুন করে তারা মিত্র খুঁজছে। সেইসঙ্গে একটি পৃথক ইসলামিক ফোরাম গঠন করার কথা ভাবছে তারা। সূত্র জানায়, গতানুগতিক ফোরাম না করে আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধারণ করেন এমন আলেম ওলামা নিয়ে এই প্ল্যাটফর্ম করা যেতে পারে বলে মনে করছেন দলটির বেশ কিছু সিনিয়র নেতা। অবশ্য এর বিপক্ষেও মত রয়েছে। তাদের দাবি, আওয়ামী লীগ যেহেতু অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল সেখানে পৃথক ফোরাম কতখানি যুক্তিযুক্ত তা ভেবে দেখা দরকার। তা ছাড়া দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক একটি পদ রয়েছে। এ পদের দায়িত্বে যিনি আছেন তিনি ইসলামিক কার্যক্রমগুলো সম্পাদন করতে পারেন। জানতে চাইলে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবীর নানক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, নির্বাচনের প্রয়োজনে মিত্র খোঁজা হবে কি না তা সময়ই নির্ভর করবে। এখনো এসব নিয়ে ভাবার জন্য ঢের সময় রয়েছে। 

এদিকে বরাবরই ধর্মভিত্তিক দলের প্রতি এক বিশেষ ধরনের দুর্বলতা রয়েছে বিএনপির। তাদের জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামী ছাড়াও একাধিক ছোট ছোট ইসলামী দল খালেদা জিয়ার ছত্রছায়ায় রয়েছে। বর্তমানে দুর্নীতির দায়ে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় রাজপথের আন্দোলন শক্তিশালী করা এবং আগামী নির্বাচন মোকাবিলার জন্য ছোট ছোট ইসলামী দলগুলোকে কাছে টানতে চাইছে তারা। একই সঙ্গে যারা তাদের সঙ্গে আছেন তারা যাতে জোট থেকে বের হয়ে না যান সে ব্যাপারে সতর্ক দলটির শীর্ষ নেতারা। এ বিষয়ে দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিএনপি রাজনীতি করে গণতন্ত্রের জন্য, আইনের শাসনের জন্য, মানবাধিকার রক্ষার জন্য। আগামী নির্বাচনে তাদের সঙ্গেই আমাদের মিত্র হবে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে বিশ্বাসী, মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনে বিশ্বাসী।

অন্যদিকে দল ভারী করার কাজে পিছিয়ে নেই জাতীয় পার্টিও। সংসদের এই বিরোধী দলটি ইতিমধ্যে ইসলামী ঘরানার বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে নতুন একটি জোট গড়েছে। যার নাম ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’, সংক্ষেপে ইউএনএ। এদিকে ভোটের হাওয়ায় নিজেদের গুরুত্ব বাড়াতে তৎপর ইসলামী দল ও জোটগুলো। এ বিষয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের (একাংশ) চেয়ারম্যান মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিদ্যমান জোটগুলোর বাইরে আমরা আলাদা একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর