রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

আকাশ-পাতাল ব্যবধান ভোটারসংখ্যায়

৩০০ সংসদীয় আসনের সীমানার খসড়া

গোলাম রাব্বানী

আকাশ-পাতাল ব্যবধান ভোটারসংখ্যায়

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০০ আসনের সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে ভোটারসংখ্যায় সমতা আনতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবারও ভোটারসংখ্যায় আকাশ-পাতাল ব্যবধান রয়েই গেছে অধিকাংশ আসনে। দেশের ১৬ কোটি জনসংখ্যার ৩০০ আসনে ভোটার রয়েছেন প্রায় ১০ কোটি ৪২ লাখ। এ ক্ষেত্রে প্রতি আসনে গড় জনসংখ্যা ৫ লাখ ৩৩ হাজার; আসনপ্রতি গড় ভোটার ৩ লাখ ৪৭ হাজার। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত সীমানার খসড়া অনুযায়ী জনসংখ্যা ও ভোটারসংখ্যার তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এবারের সীমানায় সবচেয়ে কম ভোটারসংখ্যা রয়েছে ঝালকাঠি-১ আসনে ১ লাখ ৭৬ হাজার ৯৫৮ জন। আর সবচেয়ে বেশি ভোটারসংখ্যা গাজীপুর-৫ আসনে ৬ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬১ জন। ইসি কর্মকর্তারা জানান, জেলাভিত্তিক আসনসংখ্যা ঠিক রাখতে জেলার আসনওয়ারি গড় জনসংখ্যা আমলে নিয়ে গড় ভোটারসংখ্যা বিবেচনায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৩০০ আসনের অর্ধেকে ভোটারসংখ্যা ৩ থেকে ৪ লাখের মধ্যে। এ ক্ষেত্রে ১ লাখ থেকে ২ লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ৩টি আসনে। ২ লাখ থেকে ৩ লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ৭৯টি আসনে। ৩ লাখ থেকে ৪ লাখের নিচে ভোটার ১৫৩টি আসনে। ৪ লাখ থেকে ৫ লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ৫৩টি আসনে। ৫ লাখ থেকে ৬ লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ৯টি আসনে। ৬ লাখ থেকে ৭ লাখের নিচে ভোটার ৩টি আসনে।

ভোটার তারতম্যের চিত্র : ১ লাখ থেকে ২ লাখের নিচে ভোটার রয়েছে ৩টি আসনে— যশোর-৬, পিরোজপুর-৩ ও ঝালকাঠি-১।

২ লাখ থেকে ৩ লাখের নিচে ভোটার : ঠাকুরগাঁও-২, নীলফামারী-৩, লালমনিরহাট-৩, রংপুর-১, ৬, কুড়িগ্রাম-৪, বগুড়া-২, ৩, নওগাঁ-৪, ৬, রাজশাহী-৪, ৬, নাটোর-৩, পাবনা-১, মেহেরপুর-১, ২, ঝিনাইদহ-১, মাগুরা-২, নড়াইল-১, বাগেরহাট-২, ৩, ৪, খুলনা-১, ২, ৩, বরগুনা-২, পটুয়াখালী-২, ৩, ৪, ভোলা-২, ৩, বরিশাল-১, ৩, ৬, ঝালকাঠি-২, পিরোজপুর-২, জামালপুর-২, ৪, ময়মনসিংহ-৮, ৯, ১১, নেত্রকোনা-৪, ৫, কিশোরগঞ্জ-৫, মুন্সীগঞ্জ-২, ঢাকা-৪, ৬, ৮, গাজীপুর-৪, নরসিংদী-২, ৩, নারায়ণগঞ্জ-২, গোপালগঞ্জ-৩, মাদারীপুর-১, ৩, শরীয়তপুর-১, ৩, সুনামগঞ্জ-২, ৩, ৪, সিলেট-২, মৌলভীবাজার-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১, ৬, কুমিল্লা-২, ৭, ৮, চাঁদপুর-১, নোয়াখালী-২, ৬, লক্ষ্মীপুর-১, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৭, ১২, বান্দরবান, কক্সবাজার-৪ এবং আরও ২টি আসনে।

৩ লাখ থেকে ৪ লাখের নিচে ভোটার : পঞ্চগড়-১, ২, ঠাকুরগাঁও-৩, দিনাজপুর-১, ২, ৩, ৪, ৫, নীলফামারী-১, ২, ৪, লালমনিরহাট-১, ২, রংপুর-২, ৫, কুড়িগ্রাম-৩, গাইবান্ধা-১, ২, ৪, ৫, জয়পুরহাট-১, ২, বগুড়া-১, ৪, ৬, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, ৩, নওগাঁ-২, ৩, ৫, রাজশাহী-১, ২, ৩, ৫, নাটোর-১, ২, ৪, সিরাজগঞ্জ-১, ২, ৩, ৪, ৫, পাবনা-৪, কুষ্টিয়া-১, ২, ৩, ৪, ঝিনাইদহ ২, ৩, যশোর-১, ২, ৪, ৫, নড়াইল-২, বাগেরহাট-১, খুলনা-৪, ৫, ৬, সাতক্ষীরা-২, ৩, পটুয়াখালী-১, ভোলা-১, ৪, বরিশাল-২, ৪, ৫, টাঙ্গাইল-১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, জামালপুর-১, শেরপুর-১, ২, ৩, ময়মনসিংহ-১, ৫, ৬, ৭, ১০, নেত্রকোনা-১, ২, ৩, কিশোরগঞ্জ-৩, ৪, ৬, মানিকগঞ্জ-১, ৩, ঢাকা-৩, ১০, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ২০, গাজীপুর-২, নরসিংদী-১, ৪, ৫, নারায়ণগঞ্জ-১, ৩, রাজবাড়ী-১, ফরিদপুর-২, ৩, ৪, গোপালগঞ্জ-১, ২, মাদারীপুর-২, শরীয়তপুর-২, সুনামগঞ্জ-১, সিলেট-৩, ৪, ৫, ৬, মৌলভীবাজার-১, ৩, ৪, হবিগঞ্জ-১, ২, ৩, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২, ৪, ৫, কুমিল্লা-১, ৩, ৪, ৫, ৯, ১১, চাঁদপুর-২, ৪, ফেনী-১, ২, ৩, নোয়াখালী-১, ৩, ৫, লক্ষ্মীপুর-২, ৩, ৪, চট্টগ্রাম-১, ২, ৪, ৯, ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬, কক্সবাজার-১, ২ ও ৩।

৪ লাখ থেকে ৫ লাখের নিচে ভোটার : ঠাকুরগাঁও-১, দিনাজপুর-৬, রংপুর-৩, ৪, কুড়িগ্রাম-১, ২, গাইবান্ধা-৩, বগুড়া-৫, ৭, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১, নওগাঁ-১, সিরাজগঞ্জ-৬, পাবনা-২, ৩, পাবনা-৫, চুয়াডাঙ্গা-১, ২, ঝিনাইদহ-২, মাগুরা-১, সাতক্ষীরা-১, ৪, বরগুনা-১, পিরোজপুর-১, জামালপুর-৩, ৫, ময়মনসিংহ-২, কিশোরগঞ্জ-১, ২, মানিকগঞ্জ-২, মুন্সীগঞ্জ-১, ৩, ঢাকা-১, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৬, ১৭, ১৯, গাজীপুর-৩, নারায়ণগঞ্জ-৫, রাজবাড়ী-২, ফরিদপুর-১, সুনামগঞ্জ-৫, হবিগঞ্জ-৪, কুমিল্লা-৬, চাঁদপুর-৩, ৫, চট্টগ্রাম-৫, ৮, ১০, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি।

৫ লাখ থেকে ৬ লাখের নিচে ভোটার : যশোর-৩, ময়মনসিংহ-৪, ঢাকা-২, ১৮, সিলেট-১, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩, কুমিল্লা-১০, নোয়াখালী-৪ ও চট্টগ্রাম-১১।

৬ লাখ থেকে ৭ লাখের নিচে ভোটার : নারায়ণগঞ্জ-৪, গাজীপুর-১, ৫।

ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য ১৬ জেলার ৩৮টি সংসদীয় আসনের সীমানা পরিবর্তন করে পুনর্বিন্যস্ত নির্বাচনী এলাকার খসড়া করা হয়েছে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দশম সংসদের ২৬২টি আসনের সীমানা পুনর্বহাল রাখা হয়। প্রস্তাবিত ৩৮টি আসনে উপজেলার অখণ্ডতা, প্রশাসনিক এলাকা যোগ ও বিলুপ্ত ছিটমহল যোগ করা হয়েছে। সচিব জানান, ১৬ জেলার ৩৮টি সংসদীয় আসনের পুনর্গঠিত এলাকার খসড়া করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত পুনর্গঠিত নির্বাচনী এলাকা : নীলফামারী-৩, ৪, রংপুর-১, ৩, ৪, কুড়িগ্রাম-৩, ৪, পাবনা-১, ২, মাগুরা-১, ২, খুলনা-৩, ৪, সাতক্ষীরা-৩, ৪, জামালপুর-৪, ৫, ঢাকা-২, ৩, ৭, ১৪, ১৯, নারায়ণগঞ্জ-৪, ৫, শরীয়তপুর-২, ৩, মৌলভীবাজার-২, ৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, ৬, কুমিল্লা-১, ২, ৬, ১০, নোয়াখালী-৪, ৫, চট্টগ্রাম ৭ ও ৮ আসন।

সে ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়াই একাদশ সংসদে বহাল থাকল আগের সীমানা। এর আগে ২০১১ সালে সর্বশেষ পঞ্চম আদমশুমারি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী জনসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা রেখে দশম সংসদ নির্বাচনে আদমশুমারি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আসন বিন্যাস করা হয়। পরবর্তী আদমশুমারির প্রতিবেদন হবে ২০২১ সালে। ২০০১ সালের নির্বাচনের সময় ১৯৯৫ সালের সীমানার গেজেট বহাল রাখা হয়েছিল। তবে ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ২০০৮ সালে ১৩৩ সংসদীয় আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল।

সর্বশেষ খবর