শুক্রবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাহাড়ে শুরু বৈসাবি মেলা

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে শুরু বৈসাবি মেলা

রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে ১০ ভাষাভাষী ১১টি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। এ উৎসবকে ঘিরে বসানো হয়েছে- বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা। পাহাড়ের আনাচে-কানাচে সর্বত্র এখন সাজ সাজ রব। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বসেছে হরেক রকম বাহারি পণ্যের স্টল। সব স্টল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মাচাঙ ঘরের আদলে  তৈরি-বাঁশ আর কাঠ দিয়ে। আর এসব স্টলে স্থান পেয়েছে- চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, পাংখোয়া, লুসাই, খুমি ও খিয়াং নৃগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি, সংস্কৃতি, খাবার, নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। এ মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করতে যোগ দিয়েছে অপর দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও ভারতের শিল্পীরা। গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি  মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার। এ সময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটি সেনাসদর জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল রেদুওয়ান ইসলাম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো. মুছা মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন। মেলা উদ্বোধনের পর মেলা প্রাঙ্গণ মাতিয়ে তোলে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রাদয়ের তরুণ-তরুণীরা। তাদের পায়ের নূপুরের ছন্দ আর বাঁশির সুরে ছুটে আসে হাজার হাজার দর্শক।

 মানুষের পদভারে কানায় কানায় ভরে যায় মেলা প্রাঙ্গণ। মেলাকে ঘিরে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতিগোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলনক্ষেত্রে পরিণত হবে। তাছাড়া মেলা চলাকালীন স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

এদিকে মেলা বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা উপলক্ষে রাঙামাটি সরকারি কলেজ চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে মেলাস্থলে মিলিত হয়। র‌্যালিতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সাজে অংশগ্রহণ করেন। পুরনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে মূলত এ বৈসাবি উৎসবটিকে সামনে রেখে রাঙামাটিতে তিন দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু মেলা। এ মেলা তিন দিনব্যাপী চলবে। রাঙামাটির বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী সংগীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে। শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, চাকমা নাটক, পাচন রান্না প্রতিযোগিতাসহ ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ, পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলোর জীবনধারার ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গণ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর