শুক্রবার, ৪ মে, ২০১৮ ০০:০০ টা
ঢাকায় টু্রডোর বিশেষ দূত

রোহিঙ্গা এখন বৈশ্বিক সমস্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রোহিঙ্গা ইস্যুটি এখন আর শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এটি এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। তাই বাংলাদেশের একার পক্ষে এই পরিস্থিতির সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। এই মানবিক সমস্যা মোকাবিলায় বিশ্ববাসীকে একসঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে অতীতের মতো সব উদ্যোগের সঙ্গে আন্তরিকভাবে পাশে থাকবে কানাডা। জানালেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর মিয়ানমারবিষয়ক  বিশেষ দূত বব রে। এ সময় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের পাশে থাকার জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গতকাল রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিস (সিপিজে) আয়োজিত রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বিষয়ে এক বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। রোহিঙ্গা নিধনের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সোচ্চার অবস্থান নিয়েছে ট্রুডোর দেশ কানাডা। মিয়ানমারে বিশেষ দূত পাঠিয়ে তারা নিধনযজ্ঞের তদন্তও করেছে। এ বিষয় তুলে ধরে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিশেষজ্ঞ বব রে বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যা ও মানবিক অপরাধের দায় মিয়ানমার এড়াতে পারে না। মানবাধিকার লঙ্ঘন ও মানবিকতার অবমাননার যে কলঙ্কময় ইতিহাস তারা রচনা করেছে এজন্য মিয়ানমারকে নিঃশর্ত ক্ষমা করাও উচিত হবে না। কারণ বর্তমান বিশ্বে শরণার্থী সমস্যাটি বিরাট আকার ধারণ করেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত বড় শরণার্থী সমস্যা আর কখনো দেখা যায়নি বলেও মন্তব্য করেন বব রে।

 

দ্রুত এই সমস্যার নিরসনে বিশ্ববাসীকে এক হওয়া প্রয়োজন উল্লেখ করে বব রে বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে কী ধরনের মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে তা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। সরাসরি গুলি ও সামরিক সহিংসতা ছাড়াও আমি যৌন সহিংসতার শিকার নারীদের কাছ থেকে নির্যাতনের প্রত্যক্ষ বর্ণনা শুনেছি। শরণার্থী শিবিরে আসার পথে শিশু ও বৃদ্ধদের মৃত্যুর কথাও শুনেছি।

তিনি বলেন, কানাডা মানবিক রাষ্ট্র। আমাদের প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমি দেশে ফিরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে রোহিঙ্গাদের মানবিক ইস্যুগুলো তুলে ধরব। যেন তিনি বিশ্ব নেতৃত্বকে এ বিষয়ে আরও সচেতন করে তুলতে পারেন। বব রে বলেন, আমাদের সবার দায়িত্ব সম্মিলিতভাবে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলা করা। মানবিক এই সমস্যাটিকে রাজনৈতিকভাবে সমাধান করারও তাগিদ দেন তিনি।

সমাপনী বক্তৃতায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ সাদ আন্দালিব বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে মিয়ানমার পার পেয়ে গেলে ভবিষ্যতে যে কেউ আরও বড় গণহত্যা সংঘটিত করার দুঃসাহস দেখাতে পারে। এ ছাড়া এতে করে মানুষের নৈতিকতার ওপর আঘাত আসবে। রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা মোকাবিলায় বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তি প্রয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

সিপিজের নির্বাহী পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসানের সঞ্চালনায় প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শমসের মবিন চৌধুরী, অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর