রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

নতুন ৫২ শ্রমবাজারের টার্গেট

কূটনীতি ও অভিবাসনের বাজেট

কূটনৈতিক প্রতিবেদক

পূর্ব ইউরোপসহ ৫২টি দেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারণের টার্গেট করা হয়েছে আগামী অর্থবছরের বাজেটে। এজন্য গবেষণাসহ প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনার কথা স্থান পেয়েছে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের বাজেট বক্তৃতায়। সেই সঙ্গে বিদেশে কর্মরত অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণও বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বক্তৃতায়। বলা হয়েছে, ১০ হাজারের বেশি অভিবাসী কর্মী থাকলেই সেখানে স্থাপন হবে শ্রম উইং। প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণতায় এগিয়ে চলা কূটনীতি ও বৈদেশিক সম্পর্কের প্রশংসাও করেছেন অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায়। কিন্তু মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া ইস্যুতে হতাশার সুর দেখা গেছে অর্থমন্ত্রীর কণ্ঠে। জাতীয় সংসদে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট উত্থাপন করতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী অন্যসব ইস্যুর পাশাপাশি বৈদেশিক কর্মসংস্থান, প্রবাসীকল্যাণ, আঞ্চলিক সহযোগিতা ও কূটনীতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বৈদেশিক কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অভিবাসন ব্যয় হ্রাস এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া সহজ ও নিরাপদ করার জন্য আমাদের তৎপরতা অব্যাহত রেখেছি। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে অভিবাসনে পিছিয়ে পড়া জেলাসমূহ থেকে কর্মী প্রেরণের হার বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পাঠক্রম ও মানদণ্ড অনুযায়ী তিন থেকে ছয় মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ শেষে সনদ প্রদানের উদ্যোগের ফলে উচ্চবেতনে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে। প্রবাসীকল্যাণকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীকল্যাণ পরিচালনা বোর্ডে দুজন বিদেশফেরত কর্মীর অন্তর্ভুক্তি তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে প্রত্যাগত শ্রমিকদের তথ্যভাণ্ডার তৈরি করে দেশে তাদের কর্মসংস্থানে সহায়তা করার পরিকল্পনার কথাও বলেছেন অর্থমন্ত্রী। আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা ইস্যুতে বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রভাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, যোগাযোগ, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসন সংকট মোকাবিলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করে চলেছে। একইসঙ্গে আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্র ক্রমে সম্প্রসারিত হচ্ছে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, বিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ এবং যোগাযোগ খাতে দ্বিপক্ষীয় ও উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার কয়েকটি উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলাদা একটি অনুচ্ছেদ স্থান পেয়েছে অর্থমন্ত্রীর বক্তৃতায়। তিনি বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি তাদের নিজ দেশে দ্রুত ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের সরকার সচেষ্ট রয়েছে। তাদের নিরাপত্তা, অধিকার, জীবিকার নিশ্চয়তাসহ নিজভূমে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্যে আমরা দ্বিপক্ষীয়ভাবে আলোচনা করছি ও চাপ সৃষ্টির জন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছি। তাদের জন্য বাসস্থান, সুরক্ষা, চিকিৎসা ও আনুষঙ্গিক মানবিক সহায়তাও প্রদান করছি। তবে আন্তর্জাতিক তৎপরতা ছাড়া রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থীদের পুনর্বাসন ও নিরাপদ স্বদেশ প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া মোটেও এগোবে না বলেই আমার মনে হয়, উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী।

সর্বশেষ খবর