রবিবার, ১০ জুন, ২০১৮ ০০:০০ টা

বাসায় ঢুকে এমপি ঊষাতনের কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদ ভবন এলাকায় ঊষাতন তালুকদার এমপির বাসায় ঢুকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদা না দিলে তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয় বলে শেরেবাংলানগর থানায় অভিযোগ করেছেন ঊষাতন তালুকদার এমপি। তিনি পার্বত্য রাঙামাটি এলাকার স্বতন্ত্র এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এদিকে অভিযোগ পাওয়ার পর শেরেবাংলানগর থানা পুলিশ সংসদ ভবন থেকে শুক্রবার রাতে সাতজনকে গ্রেফতার করে। ওইদিনই তাদের ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে পাঠিয়ে সাত দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। আদালত রিমান্ড না দিয়ে আসামিদের এক দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য পুলিশকে অনুমতি দিয়েছে। আসামিরা এখন কারাগারে রয়েছেন। শেরেবাংলানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জি জি বিশ্বাস বলেন, ঊষাতন তালুকদার এমপি অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার রাতে সাতজন লোক তার সংসদ ভবনের অফিসে ঢুকে ঈদ বকশিশ বাবদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ঊষাতন তালুকদার মামলায় বলেছেন, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে সংসদ ভবন-২-এর ২০৩ নম্বর কক্ষে তিনি অবস্থান করছিলেন। আসামিরা বেআইনিভাবে তার অফিসকক্ষে ঢুকে পড়েন। পরে নিজেদের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার ছোট ভাইয়ের পরিচয় দিয়ে তার কাছে সাড়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করেন। তখন আসামিরা বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে আসামিরা তাকে হত্যার হুমকিও দেন। ঘটনা প্রসঙ্গে ঊষাতন তালুকদার বলেন, মিথ্যা পরিচয় দিয়ে ঢুকে আসামিরা নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তার কাছে চাঁদা চান। চাঁদা দিতে না চাইলে নানা প্রকার হুমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে তাকে উঠিয়ে নেওয়ার হুমকি দেন। আদালতের কাছে পুলিশও এক প্রতিবেদন দিয়ে বলেছে, ঊষাতন এমপির কাছে আসামিরা দুটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা ও সরকারের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে ঈদ বকশিশ বাবদ সাড়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। চাঁদা দাবি করার অভিযোগে গ্রেফতার সাত আসামির মধ্যে একজন বাঘাইছড়ি পৌরসভার সাবেক মেয়র। তার নাম মোহাম্মদ আলমগীর (৩৭)। অন্য ছয়জন হলেন যশোরের ঝিকরগাছার ওলিয়ার রহমান (৩৭), চট্টগ্রামের হালিশহরের মো. রাজু (২৫), ময়মনসিংহের গৌরীপুরের শাখাওয়াত হোসেন সোহেল (৩৫), যশোর কোতোয়ালির শিমুল হোসেন (২৪), কক্সবাজারের উখিয়ার ফয়সাল মাহমুদ রেদওয়ান (২১) ও মাইনুদ্দিন শাহীন (২১)।

সাবেক মেয়র আলমগীরসহ সাতজনকে গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। অপরাধী চক্র শনাক্ত করার জন্য আসামিদের রিমান্ড চান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেরেবাংলানগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ মনিরুজ্জামান। তবে আদালত পুলিশের আবেদনে সাড়া না দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।

সাবেক মেয়র আলমগীরসহ অন্য আসামিদের আইনজীবী আদালতের কাছে তার মক্কেলদের নির্দোষ দাবি করেন। ষড়যন্ত্র করে তাদের বিরুদ্ধে এ মামলা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তারা। আলমগীরসহ সাতজনের আইনজীবী জয়দেব বড়াল দাবি করেন, সাবেক মেয়র আলমগীর এমপি ঊষাতন তালুকদারের কাছে ৯ লাখ টাকা পাবেন। সোনালী ব্যাংক এবং একটি পরিবহনের মাধ্যমে ঊষাতন এমপিকে এ টাকা দেন আলমগীর। এর রসিদও আদালতের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। তবে ঊষাতন তালুকদার এমপি বলেছেন, আসামি আলমগীর তার কাছে কোনো টাকা পাবেন না। তিনি ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আদালতে জমা দিয়ে তার কাছে টাকা পাওয়ার মিথ্যা দাবি করেছেন।

সর্বশেষ খবর