শুক্রবার, ১০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা
কৃষি

পাট নিয়ে বিপাকে রংপুরের কৃষক

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

পাট নিয়ে বিপাকে রংপুরের কৃষক

পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছে রংপুরের কৃষকরা। ডোবা ও নিচু জমিতে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এখন পুরোপুরি পাট কাটার সময় হলেও পাট জাগ দেওয়ার পানির অভাবে কৃষকরা পাটও কাটতে পারছেন না। আবার অনেকে পাট কেটে জমিতে কিংবা নিচু জায়গায় স্তূপ করে রাখায় তা শুকিয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ ডোবা ও নিচু জমিতে পানি সেচ দিয়ে পাট জাগ দিলেও দু-একদিন পর সে পানিও শুকিয়ে যাচ্ছে। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়নের পানবাড়ি গ্রামের কৃষক রওশন আলী বলেন, ‘তিন একর জমিতে পাট কচ্ছি। জাগ দেওয়ার পানি না থাকায় কাট পাট পালা (স্তূপ) দিয়া থুচি। রইদোতে তা শুকি যাইতোচে’। সদর উপজেলার সদ্যপুস্করণী ইউনিয়নের ফতেপুর গ্রামের কৃষক লেবু মিয়া বলেন, ‘চার একর জমিতে পাট কচ্ছি। একটা ডোবাত পানি সেচ দিয়া দুই একরের পাট জাগ দিচি। ২-৩ দিন পর পর পানি সেচ দেওয়া নাগতোচে’। পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের দেউতি গ্রামের কৃষক তালেব আলী বলেন, এক একর জমির পাট ট্রাকে করে ১৫ কিলোমিটার দূরে ঘাঘট নদীতে নিয়ে জাগ দিয়েছি। এতে উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সরওয়ারুল হক বলেন, পাট পচানোর জন্য স্বচ্ছ পানিপ্রবাহ দরকার। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছে চাষিরা। তিনি বলেন, পানির অভাবে পাট জাগের এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে কৃষকরা রিবন রেটিং পদ্ধতিতে আঁশ ছড়াতে পারে। কিন্তু রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট আগে কাটতে হয় তারপর গোড়া থেঁতলাতে হয়। এই বিষয়টাকে কৃষকরা ঝামেলা মনে করে। যে কারণে এই অঞ্চলের কৃষকরা শত ভাগ জাগের ওপর নির্ভরশীল। নির্ধারিত সময়ে পাট পচাতে না পারলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কমে যাবে বলে জানান তিনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলার আট উপজেলায় ১০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে দেশি ও তোষা জাতের পাট চাষ করে ২০ হাজার ৩৭০ মেট্রিক টন পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর