শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার

নেতা বানাব তাকে অবশ্যই আওয়ামী লীগ পরিবারের হতে হবে

—ছাত্রলীগ সভাপতি শোভন চৌধুরী

রফিকুল ইসলাম রনি

নেতা বানাব তাকে অবশ্যই আওয়ামী লীগ পরিবারের হতে হবে

ছাত্রলীগের পদ অর্জনের জন্য দুই ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। তিনি বলেছেন, আওয়ামী পরিবারের সন্তান নয়, অতীতে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না— এমন কাউকে আমার হাত দিয়ে নেতা বানাব না। কেন্দ্রীয় কমিটি বা বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা-উপজেলা, কলেজ কমিটিতে যাদেরই নেতা বানানো হবে, আগে তাদের পারিবারিক তথ্য সংগ্রহ করব। ছাত্রলীগের জন্য ঘাম ঝরাননি, এমন কাউকে পদ দেওয়া হবে না। শোভন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিন কার্যালয়ে একান্ত আলাপকালে এ প্রত্যয় ঘোষণা করেন। ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির জন্য চ্যালেঞ্জ। কারণ দেশে দুটি রাজনৈতিক দল—একটি মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আরেকটি অ্যান্টি আওয়ামী লীগ। চ্যালেঞ্জিং এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রলীগ কাজ করবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ এবং দেশরত্নের উন্নয়ন নিয়ে আমরা তরুণ প্রজন্মের কাছে যাব। সরকার গত সাড়ে নয় বছরে যেসব উন্নয়ন করেছে তা জনগণকে জানাতে শহর, হাটবাজার এবং গ্রামের ঘরে ঘরে যাব। একটাই লক্ষ্য জাতির পিতার কন্যাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আনা। কারণ শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলে দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে যাবে। যুব সমাজের কর্মসংস্থান হবে। শিক্ষার হার বাড়বে। নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হবে। আর অন্য কেউ ক্ষমতায় এলে দেশ পিছিয়ে যাবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দায়িত্ব পেলেন— সামনের চ্যালেঞ্জিং সময় কীভাবে সামাল দেবেন? জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন বলেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন তার প্রতি যথাযথ মর্যাদা রেখে কাজ করে যাব। দেশে দুই কোটি নতুন ভোটার হয়েছেন। এদের অধিকাংশই আমাদের দলের সাপোর্টার। আবার কিছু আছে, যারা কোনো রাজনৈতিক দল করেন না। আমি বিশ্বাস করি, তারা রাজনৈতিক দল না করলেও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গেই থাকবে। কারণ পাকিস্তানি ভাবধারায় যারা রাজনীতি করেন তরুণ প্রজন্ম তাদের সমর্থন করতে পারে না। উন্নয়নের পরিবর্তে দেশ পিছিয়ে যাক, দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হোক, তা তারা চান না। আমরা তাদের নৌকায় ভোট দিতে অনুরোধ জানাব। ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি কত দিনে দেওয়া হবে আর সেই কমিটি কত সদস্যবিশিষ্ট হবে?— জবাবে তিনি বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। কমিটি নিয়ে আলোচনার বিষয়। কমিটি কত সদস্যবিশিষ্ট হবে তাতে আমার সিদ্ধান্তে কিছু আসে যায় না। কিন্তু দলের জন্য ও সামনের প্রেক্ষাপটের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে শুধু দুজন যে থাকছি না, এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়। সামনে ডাকসু নির্বাচনের সম্ভাবনা। ইতিমধ্যে ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরু হয়েছে। নির্বাচনে ছাত্রলীগ কী ভূমিকা নেবে?— জবাবে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ডাকসু নির্বাচন ছাত্রলীগও চায়। ছাত্রলীগই ডাকসু নির্বাচন চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে কয়েকটি দাবি পেশ করেছিল। নির্বাচন কখন হবে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপার। বিশ্ববিদ্যালয় যদি নির্বাচন দেয়, আমরা বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করব। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ছাত্রদের ঐক্যবদ্ধ করে অংশ নেবে। কোটাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে— এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের ভূমিকা কী থাকবে?  শোভন বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করবে ছাত্রলীগ। আমরা সত্য ও সুন্দরের পক্ষে। যারা সত্য ও সুন্দরের জন্য আন্দোলন করবে তাদের উৎসাহিত করব। শিক্ষার্থীদের যে কোনো যৌক্তিক আন্দোলনের সঙ্গে থাকবে ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা চিন্তা করাই হবে আমাদের একমাত্র কাজ।

শোভন বলেন, শিক্ষার্থীদের মনে করতে হবে এই দেশটা আমাদের সবার। আন্দোলনের নামে ভাঙচুর, হত্যা ও নৈরাজ্য করলে, জনভোগান্তি সৃষ্টি করলে রাষ্ট্রের ক্ষতি হয়। দেশের মানুষের ক্ষতি হয়। দেশের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে ভবিষ্যতেও যদি শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে তবে আমরা তাদের পাশে থাকব। আর নৈরাজ্য করলে তাদের সঠিক পথটা দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।

সর্বশেষ খবর