বুধবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

গাজীপুরে মাদ্রাসায় জোড়া খুন

গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুরে এক মাদ্রাসায় জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলো গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা এলাকার হুফ্ফাজুল কোরআন মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইব্রাহিম খলিলের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (২১) ও ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ছয়ানি রসুলপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে ওই মাদ্রাসার নুরানি বিভাগের ছাত্র মো. মামুন (৮)। এ ঘটনায় নিহত মাহমুদার শিশু সন্তান আবু হুরায়রাও (৩) আহত হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ইব্রাহিম খলিলকে থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। নিহত মাহমুদার স্বামী ইব্রাহিম খলিল জানান, চান্দনার রাশেদুল ইসলাম রাজীবের বাড়ি ভাড়া নিয়ে দুই বছর ধরে হুফ্ফাজুল কোরআন মাদ্রাসা নামের হেফ্জ মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা ও শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। মাদ্রাসার একটি কক্ষে দ্বিতীয় স্ত্রী মাহমুদা আক্তার এবং দুই শিশু সন্তান আবু হুজাইফা (৫) ও আবু হুরায়রাকে (৩) নিয়ে বসবাস করতেন তিনি। গতকাল ভোরে স্ত্রী মাহমুদা ও তার দুই সন্তান এবং মাদ্রাসার দুই ছাত্র মামুন ও আবদুল্লাহকে রেখে তিনি পাশের মসজিদে যান ফজরের নামাজ পড়তে। এ সময় বাথরুম থেকে ঘরে ফিরে আবদুল্লাহ বিছানার ওপর মাহমুদা ও দরজার সামনে মামুনের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পাশেই আবু হুরায়রা (৩) কান্না করছিল। খবর পেয়ে মসজিদ থেকে বাসায় ফিরে হতাহতদের দেখতে পান ইব্রাহিম খলিল। এ বিষয়ে তিনি আর কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি এ ঘটনার সঠিক বিচার চান। নিহত মামুনের বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, তিনি গফরগাঁওয়ের একটি ডেইরি খামারে কাজ করেন। গতকাল ভোরে সন্তান নিহত হওয়ার খবর পেয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে মামুনের লাশ শনাক্ত করেন। তবে কেন মামুনকে হত্যা করা হয়েছে তা তিনি জানেন না। তিনি এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান। গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুক্তার হোসেন জানান, গতকাল সকালে চান্দনায় জোড়া খুনের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং লাশ দুটি উদ্ধার করে। পুলিশ এ সময় বিছানার পাশ থেকে রক্তমাখা একটি দা ও পাশের কক্ষ থেকে দা ধার দেওয়ার কাজে ব্যবহূত একটি কাঠের খণ্ড ও বালু উদ্ধার করেছে। লাশ দুটি মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইব্রাহিম খলিলের বসতঘরে পড়ে ছিল। নিহত মাহমুদার গলায়, গালে ও কানে এবং মামুনের ঘাড়ে, মাথায় ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ছাড়া আহত শিশু আবু হুরায়রার ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওসি জানান, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। জিএমপি কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান, ডিসি (ক্রাইম) মো. শরিফুল ইসলাম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. রফিকুল ইসলাম সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ কমিশনার ওয়াই এম বেলালুর রহমান বলেন, ‘সিআইডি, পিবিআই, ক্রাইম সিন ম্যানেজমেন্ট, মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি ক্রাইমসহ অন্যরা ঘটনা তদন্তে কাজ করছেন। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিছু সম্ভাবনা আমরা দেখতে পেয়েছি। সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিছু ব্যাপার সামনে রেখে আমরা তদন্ত শুরু করেছি। সেগুলো মাথায় রেখে তদন্তকাজ পরিচালনা করা হচ্ছে। আমি আশাবাদী শিগগিরই এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হবে।’ উল্লেখ্য, ১৬ সেপ্টেম্বর নবগঠিত গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনের এক দিন পরই এ ঘটনা ঘটল।

সর্বশেষ খবর