সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভারতীয় পত্রিকার খবর

বাংলাদেশে ঢোকার অপেক্ষায় আরও পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা

প্রতিদিন ডেস্ক

এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো অব্যাহত রয়েছে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ। সদ্য অনুপ্রবেশকারীদের দাবি, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনী এখনো নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। যারা এখনো সেখানে আছে তাদের ‘ক্রীতদাস’ বানিয়ে রাখা হয়েছে। নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অপেক্ষায় রয়েছে রাখাইনের বাকি রোহিঙ্গারা।

কক্সবাজারের একাধিক ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতারা জানিয়েছেন, নিপীড়নের হাত থেকে বাঁচতে আরও প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। প্রায় প্রতিরাতে একাধিক দল বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। তাদের অধিকাংশই নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। ৩০০ রোহিঙ্গা মিয়ানমার সীমান্তের বন-জঙ্গলে দিন গুনছে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার সুযোগের। টেকনাফ লেদা রোহিঙ্গা শিবিরের চেয়ারম্যান আবদুল মতলব বলেন, রাখাইনের যেসব রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশে আসতে পারেনি, তাদের আসলে আটকে রাখা হয়েছে। সেনারা তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে, স্থানীয় হাটবাজারেও তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এর ফলে খাবারের সংকটে রয়েছে রোহিঙ্গারা। এ কারণে সুযোগ পেলেই রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে সদ্য অনুপ্রবেশকারীরা জানিয়েছে, সেখানে সেনারা বড় আকারে জুলুম না করলেও  ভিতরে  ভিতরে কৌশলগত জুলুম চালিয়ে যাচ্ছে। রাখাইনের পুরো রাজ্যের ১৭টি ‘টাউনশিপে’ পাঁচ লাখের মতো রোহিঙ্গা আছে। রোহিঙ্গারা যে হারে অনুপ্রবেশ করছে, তাতে একদিন সবাই বাংলাদেশে চলে আসবে। জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) দেওয়া তথ্য মতে, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনে নাফ নদ পেরিয়ে ৫৩১ জন রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আগস্টে ২৫৬ জন ও জুলাইয়ে ৪১৩ জন এসেছে। তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকাতে জিরো টলারেন্সে রয়েছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রোহিঙ্গারা এখনো নৌকায় করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। শুক্রবার নাফ নদ পেরিয়ে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় সাত রোহিঙ্গাবাহী একটি নৌকা ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছে।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, আইসিসি (আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত) নিজেই মিয়ানমারের বিচারে সক্ষম। বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দফতরে তিনি এ মন্তব্য করেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিচার করার পক্ষে দেওয়া আইসিসির মতামতের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, এরই মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে মোকাবিলার সামর্থ্য প্রমাণ করেছে আইসিসি।

 মিয়ানমার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সনদে স্বাক্ষর করেনি। সে কারণে সরাসরি সে দেশে সংঘটিত অপরাধ বিচারের এখতিয়ার আইসিসির নেই। সনদে স্বাক্ষর না করা দেশকে আইসিসি তখনই বিচারের আওতায় নিতে পারে, যখন নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়। তবে মিয়ানমারের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্ত এসেছে আইসিসির পক্ষ থেকে। আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতো বেনসুদার করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬ সেপ্টেম্বর নেদারল্যান্ডসের হেগে সংস্থাটির তিনজন বিচারক বিশিষ্ট প্রি-ট্রায়াল কোর্ট মিয়ানমারের বিচারের পক্ষে রায় দেয়।

সর্বশেষ খবর