শুক্রবার, ১২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

২০ জেলায় ৩৩ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

সাংবাদিক কল্যাণ ফান্ডে ২০ কোটি টাকা অনুদান

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ জেলায় ৩৩ উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বের কোনো দেশ বাংলাদেশের মতো এত দ্রুত উন্নয়ন করতে পারেনি। বাংলাদেশ গত ১০ বছরে উন্নয়নের মহাসড়কে যে পথ পাড়ি দিয়েছে, তা অসাধ্য সাধন। ১০ বছরে জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন হয়েছে। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে  দেশের ২০ জেলায় ৩৩টি প্রকল্প উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের অধীনে বাস্তবায়িত সাতটি সেতু, একটি জেটি, নয়টি উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুম এবং ছয়টি নগর মাতৃসদন ভবন ও ১০টি নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্বোধন করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। আমরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড করেছি। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে দেশের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন শুরু করে। সব দিক থেকে মানুষ যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে, সেই চেষ্টা সরকার করছে। তিনি বলেন, জাতির পিতার আদর্শ বুকে ধারণ করে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছি।  অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দিনাজপুরের কান্তজিউ মন্দির সড়কে ডেপা নদীর ওপর ২২৮ মিটার দীর্ঘ সেতু, জামালপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ৫৬০ মিটার দীর্ঘ ‘শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল সেতু’ ও ‘শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম সেতু’, টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর ওপর ৫২০.৬০ মিটার দীর্ঘ ‘দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা সেতু’, শ্রীপুর উপজেলায় ৩১৫ মিটার দীর্ঘ সেতু, মাদারীপুরে আড়িয়াল খাঁ নদের ওপর ৬৮৬.৭৫ মিটার দীর্ঘ ‘শেখ লুত্ফর রহমান সেতু’ এবং নড়াইলে চিত্রা নদীর ওপর ‘শেখ রাসেল সেতু’ উদ্বোধন করেন। এ ছাড়া টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে নির্মিত ৫৫০ মিটার দীর্ঘ জেটিরও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার মিরপুর এক নম্বর সেকশনে, গাজীপুরের দক্ষিণ কোলার বাজারের ধীলাশ্রমে, রংপুরের পূর্ব খাসবাগে, কিশোরগঞ্জের হারুয়ায়, কুষ্টিয়ার মিলের পাড়ায় ও গোপালগঞ্জ পৌরসভায় ছয়তলা নগর মাতৃসদন এবং গাজীপুরের নীলের পাড়ায়, কুমিল্লার কমলাপুর, বাউবন্দ ও রসুলপুরে, রংপুরের এরশাদ নগর ও জুমাপুড়ায়, কুষ্টিয়ার বারাদি ও বড়খাদায়, কিশোরগঞ্জের নুরানী ও তারাপাশায় তিনতলা নগর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। নীলফামারীর ডোমার, নওগাঁর আত্রাই ও রানীনগর, নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, কিশোরগঞ্জের সদর উপজেলা, মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া, যশোরের শার্শা এবং নোয়াখালীর সদর উপজেলায় ‘উপজেলা পরিষদের সম্প্রসারিত প্রশাসনিক ভবন ও হলরুমের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করে এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যত্নবান হতে বলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মাদারীপুর, কুমিল্লা, নওগাঁ, ময়মনসিংহ এবং গাজীপুরে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির উপকারভোগীদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

স্প্যানিশ ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্প্যানিশ ভাষায় অনুদিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনীর মোড়ক উন্মোচন করেছেন। গতকাল সকালে গণভবনে এক অনুষ্ঠানে ঢাকার স্প্যানিশ দূতাবাস প্রকাশিত এই বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বইটি স্প্যানিশ ভাষায় প্রকাশের জন্য স্প্যানিশ দূতাবাস এবং বইটির সম্পাদনা ও অনুবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান। ঢাকায় স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলভারো ডি সালাস গিমেনেজ ডি অ্যাজকারাটে ও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন।

সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে প্রধানমন্ত্রীর ২০ কোটি টাকার অনুদান : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে ২০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। গতকাল গণভবনে বিএফইউজে-বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোল্লা জালাল, মহাসচিব শাবান মাহমুদের হাতে এই অনুদানের চেক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবু জাফর সূর্য পাশে ছিলেন। চেক গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল ও মহাসচিব শাবান মাহমুদ। এ ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম, তথ্য সচিব আবদুল মালেক, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ আলমগীর এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব সোহেল হায়দার চৌধুরী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 অসুস্থ, অসচ্ছল, আহত সাংবাদিক এবং নিহত সাংবাদিক পরিবারের সদস্যদের নিয়মিতভাবে ভাতা বা অনুদান দেওয়ার জন্য ২০১৪ সালের পয়লা জুলাই জাতীয় সংসদে ‘বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট বিল-২০১৪’ পাস হয়।

সর্বশেষ খবর