বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

জামায়াতকে নির্বাচনের বাইরে রাখার আইন নেই : ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

একাত্তরে গণহত্যাকারীদের সন্তান, পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থিতায়ও অযোগ্য ঘোষণার দাবি জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। এদিকে নির্বাচন কমিশন বলেছে, এজন্য প্রয়োজনীয় আইন নেই। পরবর্তীতে বিবেচনা করতে হবে। একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গতকাল নির্মূল কমিটির একটি প্রতিনিধি দল পাঁচ দফা দাবি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে। এ সময় কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতি শাহরিয়ার কবির স্মারকপত্র পেশ করেন সিইসি কে এম নূরুল হুদার কাছে। নির্বাচন ভবনে বৈঠক শেষে নির্মূল কমিটির সভাপতি সাংবাদিকদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, জঙ্গি, সন্ত্রাসী সংগঠনও যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে দাবি জানিয়েছি। কমিটির উপদেষ্টা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক জানান, জামায়াত নির্বাচনে অযোগ্য। তাই জামায়াতের কোনো সদস্য কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না। একই সঙ্গে এ দলটির সঙ্গে জোটগতভাবে কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে সে দলও নির্বাচনের অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। এ ব্যাখ্যায় নির্বাচন কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন জানান, জামায়াতসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো দল বা ব্যক্তি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি ভোটে অংশ নেওয়া দলগুলোর কাছে অঙ্গীকারনামা নিতে হবে যে, তাদের সঙ্গে জামায়াতের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সম্পর্ক নেই।

নির্মূল কমিটির পাঁচ দাবি : ঝুঁকিপূর্ণ সব নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে হুমকি প্রদানকারীদের শাস্তির আওতায় আনা; জামায়াতে ইসলামীর অনুসারীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা; নির্বাচনের সময় মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধানবিরোধী এবং ভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতি বিদ্বেষ প্রচারকারীদের শাস্তি; ’৭১-এর গণহত্যাকারীদের সন্তান বা পরিবারের অন্য সদস্যদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অযোগ্য ঘোষণা এবং সেনাবাহিনীকে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করলে তাদের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে। কমিটি স্মারকলিপিতে জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের ৯২টি নির্বাচনী এলাকায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটার রয়েছে ১২ থেকে ৪৮ % পর্যন্ত; যার বেশির ভাগ ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের নিরাপত্তায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে। পরে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী, নেতা-কর্মী, যুদ্ধাপরাধীদের উত্তরাধিকারীরা যেন ভোটে অংশ নিতে না পারেন সে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করেছে নির্মূল কমিটি। সিইসি এ বিষয়ে বলেছেন, এজন্য প্রয়োজনীয় আইন দেশে নেই। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের বিষয় আছে। সরকারের অন্য আইনের বিষয়ও আছে। তিনি জানান, ভোটে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন।

সর্বশেষ খবর