মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম

ওরা র‌্যাব সেজে করত অপহরণ চাঁদাবাজি

ধরা পড়ল ৭ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ওরা র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণসহ নানা ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িত ছিল। এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা মাঝে-মধ্যে র‌্যাবের লে. কর্নেল, মেজর হয়ে উঠত। হেয়ার স্টাইলও তাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের মতো। তাদের সংগ্রহে ছিল র‌্যাবের জ্যাকেট, হাতকড়া, ওয়াকিটকি। একের পর এক অপরাধ করলেও দীর্ঘদিনই ছিল ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে অবশেষে আসল র‌্যাবের হাতেই পাকড়াও হয়েছে তারা। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রবিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর কাউলা এলাকা থেকে ভুয়া র‌্যাবের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে আসল র‌্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলো— কাসেম ওরফে জীবন (৫৮), মো. ইব্রাহিম খলিল (৪০), জাকির হোসেন সুমন (২৭), বিল্লাল হোসেন (৩২), আবদুল  মন্নান (৫০), মো. সোহাগ (২৭) ও মো. আরিফ (২৮)। গতকাল কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, এই প্রতারক চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নানা অপরাধ চালিয়ে আসছিল। চক্রের মূল হোতা কাসেম ওরফে জীবন। নিজেদের র‌্যাব পরিচয় দিয়ে তারা ভিকটিমদের গাড়িতে তুলে মারধর করে টাকা-পয়সা নিয়ে নির্জন স্থানে  ফেলে দিত। চক্রটি মহাসড়কে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে জড়িত। গত দুই মাসে অপহরণসহ ১৩টি অপরাধের কথা তারা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। দেলোয়ার নামে একজন দুধ ব্যবসায়ী, রফিক নামে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এক সার্জেন্ট এবং মহিউদ্দিন মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে কীভাবে ওই চক্রের সদস্যরা মাইক্রোবাসে তুলে নির্যাতন করেছে- সে বর্ণনাও সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারোয়ার বিন কাশেম বলেন, এই চক্রটি গত সেপ্টেম্বরে হবিগঞ্জের মাধবপুর থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৩ লাখ টাকা এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে একজন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। গত অক্টোবরে আশুলিয়া সাভার ইপিজেড এলাকা থেকে ২ লাখ টাকা, কুমিল্লার চান্দিনা থেকে একজনকে অপহরণ করে ১ লাখ টাকা, কেরানীগঞ্জ আঁটিপাড়া বাজার থেকে সাত লাখ টাকা, নরসিংদীর শিবপুর বাজার এলাকা থেকে ১০ হাজার টাকা, মাদারীপুর শিবচর বাজার থেকে ২ লাখ, মানিকগঞ্জ পাটুরিয়া শিবালয় থানা এলাকা থেকে ১ লাখ, টাঙ্গাইল মির্জাপুর থেকে এক ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সিরাজগঞ্জ জেলার নিমতলা বাজার জোড়াব্রিজ এলাকা থেকে ২ লাখ টাকা, গাজীপুরের টঙ্গী থেকে ২ লাখ টাকা, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম মিয়ার বাজার থেকে ৩ লাখ এবং কুমিল্লার সেনানিবাস এলাকা থেকে এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে এরা।

সর্বশেষ খবর