শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ, প্রত্যাবাসন স্থগিত

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ,  প্রত্যাবাসন স্থগিত

দেশে ফিরতে রাজি না হওয়ায় আটকে গেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। গতকাল থেকে এই প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী সব রকম প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রোহিঙ্গারা বিক্ষোভ করায় কাউকে প্রত্যাবাসন করা হয়নি। সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল দুপুরে রোহিঙ্গাদের ক্ষুদ্র একটি অংশের মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার কথা থাকলেও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদের কেউই স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফেরত যেতে রাজি হননি। এ কারণে  গতকাল বিকাল ৫টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ট্রানজিট ক্যাম্পে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মাদ আবুল কালাম আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত ঘোষণা করেন।

সূত্র জানায়, প্রথম দফায় গতকাল থেকে দৈনিক দেড়শ করে প্রত্যাবাসনের জন্য ২ হাজার ২৬০ জন রোহিঙ্গাদের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এরপর প্রশাসনিকভাবে এ রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর জন্য বিভিন্নভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টাও করা হয়। অন্যদিকে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা রাখাইনে এখনো পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি—এমন দাবি তুলে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম স্থগিত করার অনুরোধ জানায়। অপর দিকে কিছু এনজিও ও প্রত্যাবাসনবিরোধী রোহিঙ্গা নেতারা সাধারণ রোহিঙ্গা ও প্রত্যাবাসনে তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গাদের ফেরত না যেতে নানা রকম প্ররোচনা দেন বলে অভিযোগ উঠে। এ অবস্থায় গতকাল সকাল থেকে ক্যাম্পে ক্যাম্পে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন রোহিঙ্গারা। দুপুরে টেকনাফের উনচিপ্রাং পুটিবনিয়া ক্যাম্পে শত শত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিরোধী বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা ‘ন যাইয়ুম, ন যাইয়ুম ( যাব না যাব না), বিচার চাই, বিচার চাই’—এমন শ্লোগান দেন।  ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কমিশনার ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। একপর্যায়ে তারা শ্লোগান দিতে দিতে মিছিল সহকারে ক্যাম্পের অভ্যন্তরের সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এদিকে গতকাল পূর্বনির্ধারিত সময়ে  প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু না হওয়া প্রসঙ্গে ত্রাণ ও শরণার্থী ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম বলেন, ‘আমরা উনচিপ্রাং ক্যাম্পে গিয়েছিলাম এবং দুপুর দুটা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছি কোনো রোহিঙ্গা ফেরত যেতে চায় কিনা জানতে। কিন্তু কেউ ফেরত যেতে চায়নি। এরপর বিকাল ৪টা পর্যন্ত সময় বাড়ানোর পরও কেউ রাজি হয়নি।’ তিনি আরও  বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে তাদের ওপর নির্ভর করছে। আমরা তাদের ওপর  কোনো জোর করব না।’

সর্বশেষ খবর