বুধবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে কঠোর ইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্যবেক্ষকদের বিষয়ে কঠোর ইসি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে পর্যবেক্ষক সংস্থার কার্যক্রম কঠোরভাবে মনিটরিং করবে নির্বাচন কমিশন। সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর দায়িত্ব পালনের বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন। সংস্থাগুলোকে নীতিমালা মেনে কাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতকাল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন ভবনে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এসব নির্দেশনা দেন। ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুগ্ম সচিব খন্দকার মিজানুর রহমান ও এস এম আসাদুজ্জামান।

এদিকে আজকের মধ্যে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য নিবন্ধিত সংস্থাকে ইসির কাছে আবেদন করতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন— এবার নির্বাচন পর্যবেক্ষণে স্থানীয় নিবন্ধিত ১১৮টি সংস্থাকে ২১ নভেম্বরের মধ্যে ইসিতে আবেদন করতে হবে। আর বিদেশি পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাজ  শেষ করবে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে আগামী ২৫ নভেম্বর পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, তথ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বসবে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া আগামীকাল ২২ নভেম্বর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ব্রিফ করবে নির্বাচন কমিশন।

পর্যবেক্ষকদের নীতিমালা মেনে কাজ করার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা এমন কিছু করবেন না যেন নীতিমালা ভঙ্গ হয়, নীতিমালা ভঙ্গ করলে আপনাদের নিবন্ধন বাতিল করা হবে।  ভোটের দিন পর্যবেক্ষকরা গণমাধ্যমে কোনো বক্তব্য দিতে পারবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা আপনাদের সামনে ক্যামেরা ধরবেন কিছু বলার জন্য। আপনি গণমাধ্যমে কোনো কথা   বলতে পারবেন না, কোনো কমেন্ট করতে পারবেন না। পর্যবেক্ষকরা কোনো লাইভ প্রচারে অংশ নিতে পারবেন না,  কোনো ইন্টারভিউ দিতে পারবেন না। এমন কিছু করতে পারবেন না যেন মনে হয় তিনি কোনো প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। ভোট  কেন্দ্রে পর্যবেক্ষকদের কাজ সম্পর্কে ইসি সচিব বলেন, তিনি শুধু  দেখবেন, পর্যবেক্ষণ করবেন। পর্যবেক্ষণ সংস্থা রিপোর্ট জমা  দেওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করবেন না। প্রয়োজনে সংবাদ সম্মেলন করতে পারেন ও রিপোর্ট কমিশনে জমা দিতে পারেন। পর্যবেক্ষকরা ভোট  কেন্দ্রে  মোবাইল  ফোন নিয়ে  যেতে পারবেন না জানিয়ে হেলালুদ্দীন বলেন, একটি কেন্দ্রে মোবাইল ফোন থাকবে দুজনের কাছে। প্রিসাইডিং অফিসার ও পুলিশ ইনচার্জের কাছে। পর্যবেক্ষকরা ভোট কেন্দ্রে ছবি তুলতে, কোনো গোপন কক্ষে যেতে, কাউকে নির্দেশনা দিতে এবং প্রিসাইডিং, পোলিং অফিসারদের কোনো পরামর্শ দিতে পারবেন না বলেও জানান ইসি সচিব। যদি  কোনো  কেন্দ্রে অনিয়ম হয়,  সেটা তারা কমিশনকে বা সংস্থার নির্বাহী ব্যক্তিকে অবহিত করতে পারেন।

রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে কারও সভা নয়: নির্বাচন কমিশন ছাড়া কোনো মন্ত্রণালয় যাতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে নিয়ে সভা না করে সে বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনারদের বৈঠক শেষে একথা জানান ইসি সচিব  হেলালুদ্দীন আহমদ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফিং করা হয়েছে—বিএনপির এমন অভিযোগের মধ্যে এ সিদ্ধান্ত এলো নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক সংস্থাটির পক্ষ থেকে।

সচিব বলেন, মঙ্গলবার কমিশন একটি নির্দেশনা দিয়েছে। সব বিষয় মিলে সরকারকে একটা পত্র দেব। সিদ্ধান্ত হয়েছে এমন— ‘ভবিষ্যতে যাতে পত্রপত্রিকায় বা (যেসব) অভিযোগ আসছে তা যেন আর না করা হয়’ বলেন ইসি সচিব। তফসিল ঘোষণার পর থেকে প্রশাসন ইসির অধীনে থাকায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেওয়ার কথা জানান হেলালুদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসার যেহেতু ইসির অধীন; সুতরাং তাদের যাতে অন্য কোনোভাবে ডেকে সভা না করা হয়—এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ বিষয়ে কনসার্ন সরকারের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেব।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর