শনিবার, ১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

বিরল প্রজাতির চিত্রা শালিক

আলম শাইন

বিরল প্রজাতির চিত্রা শালিক

দেখতে মন্দ নয়। বর্ণে বৈচিত্র্যতা আছে। শরীর কদম ফুলের মতো রোয়া হলেও বর্ণ কদমের মতো হলদে নয়। দেশে খুব কমই নজরে পড়ে। বলা যায়, অতি বিরল প্রজাতির পাখি। শীতে মাঝে মধ্যে দেখা যায় পাহাড়ি অঞ্চলের বনজঙ্গলে কিংবা উপকূলীয় এলাকায়। ওই সময় নজরে পড়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপেও। এ ছাড়াও সুন্দরবনের দুবলারচরে যৎসামান্য নজরে পড়ে। এরা দেশে পরিযায়ী হয়ে আসে শীতকালে। সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৯৮০ সালে প্রথম পাখি অনুসন্ধানী দলের নজরে পড়ে প্রজাতিটি। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে পরিচিতি মেলে পাখি দেখিয়েদের কাছে। আগে এ পাখি সম্পর্কে বিশদ কিছু জানা যায়নি। মূলত এদের বিচরণ ক্ষেত্র রাশিয়া, মরক্কো, মিসর, ভারত, নেপাল, সিরিয়া, উত্তর-পূর্ব চীন, ইরাক, ইরানসহ বিভিন্ন দেশে। এরা আমাদের দেশে বেশিরভাগই একাকি চলাফেরা করে; অন্যান্য দেশে ছোট-বড় দলে বিচরণ করতে দেখা যায়। এমনকি অন্য প্রজাতির পাখিদের সঙ্গেও ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। স্বভাবে মিশুক প্রকৃতির। পাখির বাংলা নাম, ‘চিত্রা শালিক’। ইংরেজি নাম Common Starling। বৈজ্ঞানিক নাম Sturnus Vulgaris Linnaeus। চিত্রা শালিক ছাড়াও আমাদের দেশে মোট ৫-৬ প্রজাতির শালিক নজরে পড়ে। ওরা প্রত্যেকেই এ দেশের স্থায়ী বাসিন্দা। চিত্রা প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ১৯-২৩ সেন্টিমিটার। গায়ের বর্ণ ধাতব সবুজ ও বেগুনি, তার ওপর সাদা চিতি। তবে দেখতে কালচে মনে হয়। শীতকালে সমস্ত দেহ চিত্রিত দেখায়। গ্রীষ্মে স্ত্রী পাখির বর্ণ হলটে হয়। অপরদিকে পুরুষ পাখির বর্ণ হলদেটের পাশাপাশি নীলাভ-ধূসর। ঠোঁটের গোড়া নীলাভ; বাদবাকি হলদেটে। পা লালচে-বাদামি। এদের প্রধান খাবার বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়, শস্যদানা। তবে কেঁচো, শুয়োপোকা প্রিয়।

এ ছাড়াও ফল-পাকুড় খেতে পছন্দ করে। প্রজনন মৌসুম বসন্ত থেকে গ্রীষ্মকাল। অঞ্চলভেদে প্রজনন সময়ের হেরফের রয়েছে। বাসা বাঁধে গাছের কোটরে। ডিম পাড়ে ৪-৫টি। স্ত্রী-পুরুষ উভয়ে ডিমে তা দিলেও স্ত্রী পাখি বেশি সময় তা দেয়। ডিম ফোটতে সময় লাগে ১৩-১৫ দিন।

সর্বশেষ খবর