কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ বলেছেন, আগামী ৫ বছরে কৃষি খাতে খুব দ্রুত পরিবর্তন হবে। বেশকিছু উল্লেখযোগ্য খাতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটবে। যা হয়তো আমরা এখন ভাবতেও পারছি না। নির্বাচন সামনে রেখে সেই আলোকে ইশতেহারে কিছু নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। প্রো-এগ্রিকালচার প্রো-ফারমার্স পলিসি গ্রহণ করতে হবে। কারণ কৃষিকে শুধু ফল বা ফসল চাষের খাত হিসেবে দেখার অবকাশ নেই। এর উপ-খাতগুলোতেও গুরুত্ব বাড়াতে হবে, যেমন- গবাদি পশুর খামার, মৎস্য খামার ও পোলট্রি খামার। কৃষি বাজেটে এই উপ-খাতগুলোতে থোক বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তেমন কোনো নজর নেই। অথচ এগুলোতেই বেশি নজর দেওয়া প্রয়োজন ছিল। কারণ এই উপ-খাতগুলোর সঙ্গে সবচেয়ে বেশি জড়িত শিক্ষিত তরুণরা। তাদের এই পদক্ষেপে অনেক কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য ঠিকমতো পায় সেজন্য কৃষিবাজার ব্যবস্থায় সরকারের নজর বাড়াতে হবে। ফারমার্স মার্কেটে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষিতে যে পরিমাণ ভর্তুকি আছে তা আরও বাড়ানো উচিত। সারে ভর্তুকি আছে বলেই কৃষক ধান চাষে আগ্রহী। কৃষকের অবদানেই আমরা ১৭ কোটি মানুষ খেয়ে-পরে বেঁচে আছি। তাকে যন্ত্র ভাবলে হবে না, রক্ত মাংসে গড়া মানুষ ভাবতে হবে। কৃষকের জীবনমান উন্নয়নের কথা ভাবতে হবে। কৃষিকাজের জন্য একজন কৃষকের কত ধরনের অসুখ-বিসুখ হয় অথচ তার স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো চিন্তা নেই। উন্নতবিশ্বে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, এটা আমাদের দেশেও ব্যবহার করা সম্ভব। যদিও নগরীয় কৃষিব্যবস্থাকেও আধুনিক কৃষি বলা যেতে পারে। প্রযুক্তির ব্যবহারে নগরীর ভবনে শাকসবজির চাষ হচ্ছে। আমাদের নগরীতে প্রায় ৪ লাখ দালান-কোঠা আছে। এগুলোর প্রত্যেকটিতে যদি ছাদবাগান নিশ্চিত করা যেত, তাহলে ওই ভবনের পরিবার নিরাপদ খাদ্য পেত এবং শহরেও সবুজায়ন হতো। পরিবেশও ঠিক থাকত। নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ছাদবাগান নিশ্চিত করার নীতিগত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। কৃষি গবেষণায় বাজেট বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে। ফলে কৃষি বিজ্ঞানীদের যথাযথ কাজে লাগানো যাবে। আগে যদি আমরা তাদের যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারতাম তাহলে খাদ্য নিরাপত্তার চাবিকাঠি বাংলাদেশের হাতে থাকত।