শিরোনাম
রবিবার, ২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রখ্যাত আলোকচিত্রী আনোয়ারের লাশ হোটেল থেকে উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রখ্যাত আলোকচিত্রী আনোয়ারের লাশ হোটেল থেকে উদ্ধার

প্রখ্যাত আলোকচিত্রী আনোয়ার হোসেনের (৭০) লাশ গতকাল সকালে রাজধানীর পান্থপথে হোটেল অলিওড্রিম হেভেনে পাওয়া গেছে। পুলিশ ওই হোটেলের একটি কক্ষ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। ফ্রান্সপ্রবাসী এই চিত্রগ্রাহক পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতার বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে তিনি দেশে আসেন। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার জানান, আনোয়ার হোসেন ২৮ নভেম্বর হোটেল অলিওতে ওঠেন। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তিনি বাইরে থেকে হোটেলে ফিরে আসেন। প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানের আয়োজনকারী দলের সদস্যরা সকালে ওই হোটেলে এসে তার কক্ষের দরজায় ধাক্কা দিলেও কোনো সাড়া পাচ্ছিলেন না। আধা ঘণ্টা ধরে দরজায় ধাক্কা দেওয়ার পরও সাড়া না পাওয়ায় তারা পুলিশে খবর দেন। পুলিশের উপস্থিতিতে দরজা ভেঙে আনোয়ারের লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

 ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। হোটেল অলিওড্রিম হেভেন থেকে জানা যায়, আনোয়ার হোসেন ৮০৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন। ফিনিক্স ফটোগ্রাফি সোসাইটির নামে একটি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার বিচারক হয়ে কাজ করছিলেন তিনি। আনোয়ার হোসেন ফ্রান্সে সপরিবারে বাস করেন। এ প্রতিযোগিতার কাজে তিনি দেশে এসেছিলেন। তার দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার আয়োজকরা। তারাই প্রতিদিন তাকে নিয়ে যেতেন আবার পৌঁছে দিতেন। প্রতিযোগিতাটির সঙ্গে যুক্ত আসাদুজ্জামান সবুজ জানান, আয়োজনের ছবি নির্বাচনের জন্য কাজ করছিলেন আনোয়ার হোসেন। গত কয়েক দিনের মতো শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে দেখা করে ছবি বাছাইয়ের কাজ করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী সকাল সাড়ে ৭টা থেকে আনোয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু তা রিসিভ হচ্ছিল না। এরপর প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত দুজন ব্যক্তি হোটেলে এসে ফোন দিয়ে ও দরজায় নাড়া দিয়েও কোনো সাড়া পাননি। এরপর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশ ও হোটেল কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে দরজা ভাঙলে ভিতরে আনোয়ার হোসেনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, ১৯৪৮ সালের ৬ অক্টোবর পুরান ঢাকার আগা নবাব দেউড়িতে আনোয়ার হোসেনের জন্ম। ছোটবেলায় আঁকাআঁকির মাধ্যমেই রঙের দুনিয়ার সঙ্গে পরিচয় ঘটে এই বরেণ্য আলোকচিত্রীর। বুয়েটে স্থাপত্যবিদ্যায় ভর্তি হয়েও পড়ালেখা শেষ না করে সিনেমাটোগ্রাফি পড়তে চলে যান ভারতের পুনেতে। ক্যামেরা হাতে ধারণ করেন নামকরা বেশকিছু ফিচার ফিল্মের চলচ্চিত্র। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা। চিত্রগ্রাহক পরিচয়ের চেয়েও তিনি খ্যাতিমান ছিলেন আলোকচিত্রী হিসেবে। আনোয়ার হোসেনের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ছবিগুলো হলো— সূর্যদীঘল বাড়ী (১৯৭৯), এমিলের গোয়েন্দা বাহিনী (১৯৮০), পুরস্কার (১৯৮৩), অন্য জীবন (১৯৯৫) ও লালশালু (২০০১)।

সর্বশেষ খবর