শনিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দুই বাংলার মিলনমেলা হরিপুর সীমান্তে

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

দুই বাংলার মিলনমেলা হরিপুর সীমান্তে

কাঁটাতারের বেড়া আটকাতে পারেনি দুই বাংলার হাজার হাজার মানুষকে। ঠাকুরগাঁওয়ের কোঁচল ও চাঁপাসার এবং ভারতের নাড়গাঁও ও মাকারহাট সীমান্তের কাঁটাতারের এপার-ওপারে ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দুই বাংলার মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়। প্রতি বছর শ্রীশ্রীজামর কালীর জিউ (পাথরকালী) পূজা উপলক্ষে মেলা আয়োজন করা হয়। আর প্রতি বছর এদিনে দূরদূরান্ত থেকে দুই দেশের স্বজন ভিড় জমায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার চাঁপাসার ও রাণীশংকৈল উপজেলার কোঁচল সীমান্তের ৩৪৫ ও ৩৪৬ নম্বর পিলার এলাকায়। প্রতি বছরের মতো এবারও গতকাল সকাল থেকে দুই দেশের স্বজন সীমান্তে সমবেত হতে থাকেন। স্বজনদের সঙ্গে দেখা ও কথা বলার জন্য হাজার হাজার মানুষ ছিলেন অপেক্ষায়। দুপুর ১২টায় কথা হয় একে অন্যের সঙ্গে। আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য ও পণ্যসামগ্রী। সৈয়দপুর উপজেলার বাসিন্দা মরিয়ম বেগম (৫০) জানান, এবার দেখা করেছেন তার ছোট বোন শেফালির সঙ্গে। ১৬ বছর আগে শেফালির বিয়ে হয় ভারতের মালদা জেলার চানমুনী গ্রামে। বিয়ের পর এই প্রথম বোন ও বোনের স্বামীর দেখা পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে তার বোন ও বোনের ছেলেমেয়ে ও স্বামীকে কাপড় এবং মিষ্টি দিয়ে বেশ আনন্দ পান। দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার প্রতিমা রানী (৬০) বলেন, ‘২০ বছর আগে আমার ছোট মেয়ে কমলা রানীর বিয়ে হয় ভারতের গোয়ালপুকুর থানার পাঁচঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর আর কথা হয়নি তার সঙ্গে। কিন্তু আজ মেয়ের সঙ্গে কাঁটাতারের এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে কথা বলেছি এবং ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও কাপড়-চোপড় দিয়েছি।’ হরিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আমিরুজ্জামান জানান, কড়া প্রহরা সত্ত্বেও অনেকে কাঁটাতারের এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন। এ ব্যাপারে শ্রীশ্রীজামর কালীর জিউ (পাথরকালী) পূজা কমিটির সভাপতি নগেন কুমার পাল জানান, এবার স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও বিএসএফের পক্ষ থেকে সীমান্তে কঠোর নজরদারি থাকা সত্ত্বেও অন্য বছরের তুলনায় এবার দুই দেশের স্বজনরা সহজেই কথা বলেছেন ও খাদ্য বিনিময় করেছেন।

সর্বশেষ খবর