রবিবার, ৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরিবেশ নষ্ট না করে উন্নয়ন করতে হবে

—ডা. আবদুল মতিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিবেশ নষ্ট না করে উন্নয়ন করতে হবে

এবারের নির্বাচনে মেনিফেস্টো হতে হবে পরিবেশ নষ্ট না করে দেশের উন্নয়ন করা। অর্থাৎ দেশের উন্নয়ন করতে হবে পরিবেশের কোনো ক্ষতি ছাড়াই। ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ রক্ষায় স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার জন্য চুক্তি সই করে। সে সময় বাংলাদেশ, পরিবেশের সংরক্ষণ করেই উন্নয়ন করতে হবে— এই সিদ্ধান্তে একমত হয়। কিন্তু এই বিষয়ে সরকার এখন চীনা নীতি অনুসরণ করছে। মূলত উন্নয়ন হতে হবে পরিবেশ সংরক্ষণ করে। আর সে উন্নয়ন হতে হবে স্থিতিশীল উন্নয়ন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সাধারণ সম্পাদক ডা. আবদুল মতিন গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে পরিবেশের সঙ্গে সম্পর্কিত অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। আর সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনের বেশ কিছু প্রকল্প নিয়ে আমাদের দ্বিমত আছে। ‘বিদ্যুৎ যে কোনো মূল্যে লাগবে’ সরকারি এই নীতির সঙ্গে আমরা একমত নই। দেশে ঝুঁকি নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এর বাইরে ২৩টি কয়লাভিত্তিক ও ২টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকার চীনের নীতি অনুসরণ করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য এই নীতি গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এই দেশের আয়তন অনুপাতে জনসংখ্যার ঘনত্বও বেশি। চীনা নীতি অনুযায়ী আগে উন্নয়ন পরে পরিবেশ ঠিক করা হবে এই নীতি সঠিক নয়। এ কথা ঠিক যে, আমাদের বিদ্যুৎ লাগবে। কিন্তু রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র করে পরিবেশ ঝুঁকিতে ফেলে বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়। আবার সমুদ্রবন্দর ও সমুদ্র এলাকা কক্সবাজারে আমদানিকৃত কয়লার কালিতে পরিবেশ নষ্ট হোক তাও কাম্য নয়। এই নির্বাচনে রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে এই বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে হবে।

বাপার সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশে কার্বন নিঃসরণ হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশুদ্ধ পানির উৎস এই কার্বন শুষে নেয়। বিশুদ্ধ পানির যে জলাধার, সেখানে থাকা লতা-গুল্ম কার্বন হজম করে নেয়। এ জন্য দেশ থেকে কার্বন শোষণের জন্য আমাদের বিশুদ্ধ পানির জলাধারের ব্যবস্থা করতে হবে। আবার গাছপালাও কার্বন শুষে নেয়। কিন্তু শিল্পায়নের জন্য গাছ কেটে ফেলায় বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এরই মধ্যে উন্নয়ন কাজের অবকাঠামো নির্মাণের জন্য কক্সবাজারের মাতারবাড়ি এলাকায় প্রচুর গাছ কাটা হয়েছে। তা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এ ছাড়া পরিবেশ দূষণ রোধে কৃষি জমিতে জৈবসার ব্যবহার করতে হবে। আর বর্তমানে যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেও বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। রাস্তায় মাত্রাতিরিক্ত যানবাহন নামানোয় এমনটি হচ্ছে, পরিবেশ দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। মূলত উন্নয়ন স্থায়িত্বশীল হচ্ছে না বলেই এমনটি হচ্ছে।    

সর্বশেষ খবর