শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

রঙিলা চ্যাগা

আলম শাইন

রঙিলা চ্যাগা

স্বভাবে পরিযায়ী না হলেও স্থানীয়ভাবে স্থানান্তরিত হতে দেখা যায়। ঝোপ-জঙ্গল ঘেরা জলাশয় কিংবা নদীর তীরে বেশি দেখা যায়। এরা নিশাচর হলেও খুব ভোরে কিংবা শেষ বিকালে শিকারে বের হয়। প্রকাশ্যে শিকারে বের হয় না বললেই চলে। নিরীহ প্রজাতির পাখি এরা। নিজেদের আড়াল করে রাখতে পছন্দ করে। ভয় পেলে দ্রুত দৌড়ে পালায়। স্ত্রী পাখি দেখতে ভারি সুন্দর। পুরুষ পাখি অনেকখানি নিষ্প্রভ। স্ত্রী পাখির চরিত্র খুব একটা সুবিধার নয়। বহুগামিতার প্রমাণ পাওয়া যায়। রূপ কাজে লাগিয়ে পুরুষ পাখিকে আকৃষ্ট করে। এ ছাড়াও নানা ধরনের কসরৎ করে পুরুষ পাখির সঙ্গে ভাব জমায়। এ ভাবে অন্য স্ত্রী পাখির কাছ থেকে পুরুষকে ভাগিয়ে সংসার পাতে। তবে সেই সংসার ক্ষণস্থায়ী; শুধু ডিম দেওয়া পর্যন্ত সাংসারিক সময়কাল। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ, ভারত পাকিস্তান, জাপান, দক্ষিণ-পশ্চিম আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া পর্যন্ত। পাখির বাংলা নাম—‘রঙিলা চ্যাগা’, ইংরেজি নাম—‘পেইন্টেড স্নাইপ’, (Painted Snipe) বৈজ্ঞানিক নাম— Rostratula Benghalensis। সংস্কৃত সাহিত্যে এরা ‘কুনাল পাখি নামে পরিচিত। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য ২৭-২৮ সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখি লম্বায় খানিকটা ছোট। পুরুষ পাখির চিবুক, ঘাড়ের দুই পাশ গলা, বুক বাদামির ওপর সাদা ছিট। বুকের শেষে কালচে-সাদা পাট্টি। কণিনিকা বাদামি। ঠোঁট সরু গোড়া সবজেটে। ঠোঁটের ডগা সামান্য বাঁকানো। অপরদিকে স্ত্রী পাখির রূপ ভিন্ন। ওপরের পালক ধাতব জলপাই সবুজের ওপর সামান্য হলুদ। তাতে রয়েছে কালচে টানও ছোপ। চোখ বড় বড়।

 চোখের চারপাশে সাদা বলয়। বলয়টি চোখ ছাড়িয়ে ঘাড়ে গিয়ে ঠেকেছে। সাদাটে দাগ চিবুক গলা হয়ে বুকের উপরাংশে ঠেকেছে। বুকের নিম্নাংশ কালচে থেকে সাদা হয়ে নিচের দিকে পৌঁছেছে। স্ত্রী-পুরুষ উভয় পাখিরই লেজটা খাটো। তবে পা লম্বাটে। প্রধান খাবার— ঘাসের কচি ডগা, ঘাসের বীজ, পোকামাকড় ইত্যাদি খায়। প্রজনন সময় গ্রীষ্ম থেকে বর্ষাকাল। এ সময় পুরুষ পাখি মাটির ওপর ঘাস লতাপাতা বিছিয়ে বাসা বানায়। বাসা তৈরি হলে স্ত্রী পাখি ২-৪টি ডিম পেড়ে পালিয়ে যায়। পুরুষ পাখি ১৫-২১ দিন ডিমে তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে লালন পালন করে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর