শুক্রবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মহাজোটের ১৫০ আসনে প্রার্থী দেওয়া একটা কৌশল : কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দেড় শতাধিক আসনে মহাজোটভুক্ত দলগুলোর একাধিক প্রার্থী রাখা একটি কৌশল। বিএনপি যদি শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে সরে যায় তাহলেও যেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট হয়, সেজন্য আগেভাগে এ কৌশল ঠিক করে রাখা হয়েছে। গতকাল সচিবালয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলারের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাজোট থেকে জাতীয় পার্টি, ১৪ দল, বিকল্পধারার মধ্যে আসন ভাগাভাগি হলেও তার বাইরে অন্য দলগুলোর নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে ভোট করায় আওয়ামী         লীগের আপত্তি নেই। আমাদের একটা কৌশল আছে, কৌশলটা তো বলব না। সুস্পষ্ট কৌশল আছে। তিনি বলেন, আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অ্যালায়েন্স দাঁড়িয়ে গেছে। আমরা না বুঝে দিয়েছি এটা ইলেকশনের দিন বুঝতে পারবেন, অন্যরা যদি সরে যায় তারপর? এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতার ফাঁদ তৈরি করতে দেব না।

বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন কিনা— এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি এখনো তা মনে করি না, তারা থাকবে এটাই আশা করব। কিন্তু তাদের সিদ্ধান্ত তো আমি জানি না, এখনো তারা পরিষ্কার করে কিছু বলেনি। তাদের যে কার্যকলাপ, তাতে সংশয় জাগে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।

বেশি প্রার্থী রাখার কৌশল কি বিএনপিকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা থেকে— এ প্রশ্নে কাদের বলেন, না, না; তারা সরে যেতে পারে বলেই অ্যালায়েন্সকে নিয়ে কৌশল নিয়েছি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ফ্রি ও ফেয়ার নির্বাচন আশা করে। আমি বলেছি, এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ অনেক ভালো। তাই প্রত্যাশা করছি, পিসফুলি হবে। সরকার কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। শুধু নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করবে, যাতে নিউট্রাল ভূমিকা পালন করতে পারে। আমরা এ আশ্বাস আবারও দিয়েছি।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সহিংসতা এড়িয়ে চলতে তার দল ‘যথাসাধ্য’ চেষ্টা করছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক ভায়োলেন্স চরম রূপ নিয়েছে নোয়াখালী ও ফরিদপুরে। ক্যাজুয়ালিটির দুজনই আওয়ামী লীগের। সরকার হিসেবে এখানে ভায়োলেন্স এড়িয়ে চলেছি যথাসাধ্য। আমাদের নেত্রীর সংযম ও সহিষ্ণুতা প্র্যাকটিস করার বিষয়টি সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি।

প্রচারে বাধা পাওয়া নিয়ে বিএনপির অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনি একজন প্রার্থী, আপনার পক্ষে জনমত যদি প্রবল হয়, কেউ বাধা দেওয়ার সাহস পাবে না। কারও মিটিংয়ে পুলিশ বাধা দিয়েছে সে রকম কি হয়েছে? একটা-দুটো বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটতেও পারে। এখন কারও যদি অবস্থান দুর্বল হয়, দুর্বল অবস্থানের কারণে তারা পিছিয়ে যায়, অবস্থানটা সবল হলে এগিয়ে যেতে পারত।

এদিকে গতকাল রাজধানীতে এক নির্বাচনী প্রচারে ওবায়দুল কাদের বলেন, দুর্বল পার্টি বেশি বেশি গোলমাল করে। জেতার ব্যাপারে যারা আশাবাদী, তারা গোলমাল করতে যাবে না।

কাদের বলেন, গাড়িতে হামলা ও গ্রেফতার দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে হতে পারে। এ ক্ষোভটা আমাদের দলেও আছে, বিএনপির ক্ষেত্রেও তো এটা হতে পারে। নির্বাচনে সবার সমান সুযোগ না থাকা নিয়েও কোনো অসুবিধা দেখছি না। তিনি বলেন, আমি কোনো অসুবিধা দেখছি না। আমি আমার গাড়িতে পতাকা ব্যবহার না করে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে এলাকায় গেছি, প্রটেকশন তো দিতে পারে। যারা বিপক্ষ যেমন ধরেন মওদুদ আহমদ সাহেবকেও নিরাপত্তা দিচ্ছে পুলিশ। যার জীবনের ওপর যত প্রকার আক্রমণের আশঙ্কার কথা গোয়েন্দা রিপোর্টে আছে, সে আওয়ামী লীগের হোক আর বিএনপির হোক, তাকে যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া ইসির নিশ্চিত করা উচিত।

সর্বশেষ খবর