শনিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

সংসারী পাখি বন কোকিল

আলম শাইন

সংসারী পাখি বন কোকিল

এ পাখির বাংলা নাম, ‘বন কোকিল’। ইংরেজি নাম, ‘গ্রীনবিল্ড মালকোহা’। বৈজ্ঞানিক নাম, Phaenicophaeus tristis। গোত্রের নাম, ‘কুকুলিদি’। অঞ্চলভেদে এরা সবুজ কোকিল নামেও পরিচিত।

বসন্তের আগমনে সুর ছড়িয়ে দিতে পারে না এরা। কারণ জ্ঞাতিভাই কোকিলের মতো গলায় সুর নেই এদের। তাই একবারেই চুপচাপ থাকে। তবে দেখতে ভারী চমৎকার। কোকিলের মতো অলস বা ফাঁকিবাজও নয়। নিজেরাই খেটেখুটে বাসা বানায়। ডিম পেড়ে নিজেরাই তা দিয়ে বাচ্চা ফুটিয়ে লালন-পালন করে। এক কথায় সংসারী। দেশের স্থানীয় প্রজাতির পাখি হলেও সচরাচর দেখা যায় না। থাকে বন-বাদাড়ে। এক সময় সুলভ দর্শন ছিল। হালে এদেরকে একাকি বা এক জোড়ার বেশি কোথাও দেখা যায় না। বসন্তে লোকালয়ে এলেও নীরবে নীভৃতে কাটিয়ে বনে ফিরে যায়। গায়ের পালক পাতা বর্ণের বিধায় অনেক সময় ওদের অবস্থান জানা কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে সহজেই মানুষের চোখে ধরা পড়ে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উড়ন্ত অবস্থায় এরা মানুষের নজরে পড়ে। কারণটি হচ্ছে, প্রজাতির লেজ অনেক লম্বা, এমনি লম্বা যে উড়তে গেলে তা কারোর-ই নজর এড়িয়ে যেতে পারে না। আকৃতিতে বড় হলেও স্বভাবে এরা নিরীহ। সুযোগ পেয়ে অন্য প্রজাতির শান্ত-নিরীহ পাখিরা পর্যন্ত এদেরকে তেড়ে যায়। যেমন ঘুঘু এদেরকে তেড়ে গেলেও এরা বিবাদ বাধায় না বরং পালিয়ে বাঁচে। প্রজাতির গড় দৈর্ঘ্য লেজসহ ৫৭-৫৯ সেন্টিমিটার। লেজ আকারে শরীরের দেড় গুণ লম্বা, থরে থরে সাজানো। গায়ের ওপরের পালক ছাই-ধূসর, তার ওপর গাঢ় সবুজের আভা। লেজ পরিষ্কার সবুজ। লেজের মাঝখানে কয়েকটা সাদা টান। অগ্রভাগ সাদা। লেজের তলার দিকটা ছাই-ধূসরের ওপর সাদা টান রয়েছে। চোখের চারপাশ পালকহীন লাল চামড়ায় আবৃত। ঠোঁট সবুজ, গোড়ার দিক লালচে। পা সবুজ-স্লেট বর্ণের। প্রধান খাবার : কীট-পতঙ্গ, অন্য প্রজাতির পাখির ডিম। প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। ঘন পত্র-পল্লবের আড়ালে বাসা বাঁধে। বাসার তেমন শ্রী-ছাদ নেই। ডিম পাড়ে ৩-৪টি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর