বৃহস্পতিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের হাওয়া সারাদেশে

কমিশনারের একক নির্দেশনায় আওয়ামী লীগের আপত্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারকে ইঙ্গিত করে আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না, উচিত নয়। তাহলে জনমনে এ বিষয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। কারণ এমনটি ঘটলে চেইন অব কমান্ড নষ্ট হয়। একই সঙ্গে তিনি বলেন, কালো টাকা ও পেশিশক্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে।

গতকাল ইসি ভবনে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে মিডিয়া সেন্টারে প্রেস বিফ্রিংকালে এ কথা বলেন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন মানে সিইসি ও চার কমিশনার যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন। কোনো কমিশনার বা যে কেউ একা কিছু বলা সমীচীন হবে না।  কোনো কমিশনার একক নির্দেশনা দিতে পারেন না। তিনি আরও বলেন, সকালে গণমাধ্যমে একজন কমিশনারের বক্তব্য শুনেছি। আমরা নিজেরাই হকচকিত হয়ে গেছি। কারণ একজন কমিশনার এককভাবে কোনো নির্দেশনা দিতে পারেন না। যা সিদ্ধান্ত হবে সে বিষয়ে নির্দেশ দেবেন পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার সে সিদ্ধান্ত জানাবেন। কমিশন থেকে বের হয়ে আরেকজন ব্যক্তিগত মত দেবেন-তা গ্রহণযোগ্য নয়।

এইচ টি ইমাম বলেন, কমিশন বৈঠকে কোনো কমিশনার ভিন্নমত প্রকাশ করতে পারেন। কিন্তু তিনি তা বাইরে এসে বলতে পারেন না। এতে করে মানুষের কাছে ভুলবার্তা যেতে পারে। কারণ কমিশনের মর্যাদা রক্ষা করতে হবে। এইচ টি ইমাম আরও বলেন, সরকারি দল হিসেবে আমরা অনেক কিছুই বলতে পারি। অনেকের কাছে আমরা নির্দেশও দিতে পারি। কিন্তু তা না করে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে বার বার আসি এজন্য যে- অন্যরাও এটা করে। কারণ সবাই মনে করে কমিশনের কাছে বিচার পাব। আমাদের কাছে কমিশন হচ্ছে ভরসাস্থল। এ বিষয়টি অন্যরা পালন করেন না। নির্বাচন কমিশনকে শুধু হেয় নয়, কমিশনের সামনে এমনভাবে কথা বলেন, যেগুলো আচরণবিধির মধ্যে পড়ে না। নির্বাচন কমিশনকে কেউ কেউ টেবিল চাপড়ে কথা বলেন বা কেউ অশোভন উক্তি করেন- এতে আমরাও ছোট হয়ে যাই। কমিশনকে আমরা এ বিষয়টিও জানিয়েছি।

এ ছাড়া সিইসির সঙ্গে বৈঠকে তারা যান চলাচলে বিধিনিষেধ শিথিল, সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতি, প্রার্থী ও দলের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য যান চলাচলের অনুমতি দেওয়ার বিষয়গুলো উল্লেখ করেছেন বলে জানান এইচ টি ইমাম। তিনি বলেন, অর্থের অনেক চালানের মধ্যে একটি ধরা পড়েছে। কালো টাকার প্রভাবের বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে। নির্বাচনের দিন, অনলাইন মানি ট্রান্সফার বা মোবাইল ব্যাংকিং বন্ধ করার বিষয়ে কমিশনের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি এনজিওর বিষয়ে তাদের অবজারভেশন তুলে ধরা হয়েছে।

এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, অ্যাডভোকেট নজিবুল্লাহ হিরু, অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার ও ড. সেলিম মাহমুদ প্রমুখ। এরপর হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা ইসি সচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে তারা সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা যেন না বাড়ে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে কমিশনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর