শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
ভোটের হাওয়া সারাদেশে

১৮ প্রার্থীসহ লক্ষাধিক কারাগারে : ঐক্যফ্রন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জানিয়েছে, লক্ষাধিক মানুষ এখন কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি জোট ও ফ্রন্টের নেতা-কর্মীই বেশি। তা ছাড়া তফসিল ঘোষণার আগে ও পরে ধানের শীষের ১৮ জন প্রার্থীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গতকাল বিকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক। এ সময় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।  জগলুল হায়দার আফ্রিক বলেন, তফসিল

ঘোষণার দিন কারাগারে ছিল ৯০ হাজার বন্দী। অথচ সর্বশেষ বৃহস্পতিবার এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৯৭ হাজারে। বর্তমানে সেটা বেড়ে লক্ষাধিক। ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে ৮৪৪টি, আহত হন ১৩ সহস্রাধিক, নিহত ৯ জন, হামলা হয়েছে ২ হাজার ৮৯৬টি। দিন দিন এ পরিসংখ্যান জ্যামিতিক হারে বাড়ছেই। কারাগারে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীই বেশি। গতকাল রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সারা দেশে চিরুনি অভিযান চালিয়ে ঐক্যফ্রন্টের নেতা-কর্মীদের যেখানেই পেয়েছে গণহারে গ্রেফতার করেছে। গণগ্রেফতারের মধ্যদিয়ে দেশের কারাগারগুলোকে ঐক্যফ্রন্ট নেতা-কর্মীদের দিয়ে ভরে ফেলা হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, তফসিল ঘোষণার পর দেশের বিভিন্ন জেলায় ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০ হাজারেরও বেশি ঐক্যফ্রন্ট নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে। এভাবে ঢালাও আটকের মধ্যদিয়ে ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্টদের টার্গেট করে গ্রেফতার চালানো হচ্ছে। মূলত নির্বাচন কেন্দ্রে ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর এজেন্টশূন্য রাখার অপরিণামদর্শী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গ্রেফতার অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য। ধরপাকড়ের নামে ক্ষমতাসীনদের নীলনকশা বাস্তবায়নের এমন অশুভ কার্মকা- থেকে সংশ্লিষ্ট সব মহলকে অবিলম্বে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। সংবাদ সম্মেলনে ধানের শীষের যেসব প্রার্থী কারাগারে ও নানাভাবে যারা নির্বাচন করতে পারছেন না তার তালিকাও তুলে ধরা হয়।

ধানের শীষের ১৮ প্রার্থী কারাগারে : নরসিংদী-১ খায়রুল কবীর খোকন, কুমিল্লা-১০ মনিরুল হক চৌধুরী, গাজীপুর-৫ ফজলুল হক মিলন, ঝিনাইদহ-৩ অধ্যাপক মতিউর রহমান, টাঙ্গাইল-২ সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, চট্টগ্রাম-৯ ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম-৪ আসলাম চৌধুরী, গোপালগঞ্জ-৩ এস এম জিলানী, রাজশাহী-৬ মো. আবু সাঈদ চাঁদ, মাগুরা-১ মো. আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম-১৫ আ ন ম শামসুল ইসলাম, কক্সবাজার-২ এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, সাতক্ষীরা-২ মুহাম্মদ আবদুল খালেক, খুলনা-৬ আবুল কালাম আজাদ, ঠাকুরগাঁও-২ মাওলানা আবদুল হাকিম, সাতক্ষীরা-৪ গাজী নজরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া-১ রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, যশোর-২ আবু সাঈদ মো. শাহাদাত।

যাদের প্রার্থিতা স্থগিত ও বাতিল হয়েছে : নরসিংদী-৩ মঞ্জুর এলাহী, নাটোর-৪ আবদুল আজিজ, গাইবান্ধা-৪ ফারুক আলম, চাঁদপুর-৪ আলহাজ আবদুল হান্নান, জামালপুর-১ রশিদুজ্জামান মিল্লাত, মানিকগঞ্জ-২ আফরোজা খান রিতা, সিলেট-২ তাহমিনা রুশদী লুনা, মানিকগঞ্জ-১ এম এ জিন্নাহ, নাটোর-১ মঞ্জুরুল ইসলাম, নওগাঁ-১ ডা. খালেক, রাজশাহী-৫ নাদিম মোস্তফা, বগুড়া-৩ মুহিত তালুকদার, কক্সবাজার-২ আলমগীর মাহফুজ উল্লাহ, ময়মনসিংহ-১ আলী আসগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ ইঞ্জিনিয়ার মুসলিম উদ্দিন, দিনাজপুর-৩ মো. জাহাঙ্গীর আলম, জয়পুরহাট-১ ফজলুর রহমান, বগুড়া-৭ মোরশেদ মিল্টন, রাজশাহী-৬ আবু সাঈদ চান, ঝিনাইদহ-২ আবদুল মজিদ, জামালপুর-৪ শামিম তালুকদার, ঢাকা-১ খন্দকার আবু আশফাক, ঢাকা-২০ তমিজ উদ্দিনসহ আরও অনেক আসন ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীশূন্য। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের যৌক্তিক দাবি সত্ত্বেও এসব আসনে পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে না। এতকিছুর পরও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু জাতীয় ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার হেন কোনো চেষ্টা নেই, যা করা হচ্ছে না।

সর্বশেষ খবর