শনিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

ভোট নিতে প্রস্তুত প্রত্যন্ত অঞ্চল

বান্দরবান-রাঙামাটির ৩১ কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী ও জনবল গেছে হেলিকপ্টারে

বান্দরবান ও রাঙামাটি প্রতিনিধি

ভোট নিতে প্রস্তুত প্রত্যন্ত অঞ্চল

মোরেলগঞ্জে গতকাল র‌্যাবের তল্লাশি (বাঁয়ে)। হেলিকপ্টারে করে ভোটের সরঞ্জাম নেওয়া হচ্ছে রাঙামাটিতে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পার্বত্যজেলা বান্দরবানের ১৭৬টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে দুর্গম ১৩টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী ও জনবল পাঠানো হয়েছে হেলিকপ্টারে। অন্যদিকে রাঙামাটির দুর্গম অঞ্চলের ১৮টি ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও জনবল পাঠানো হয়েছে। দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে সম্ভাব্য সহিংসতা মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

বান্দরবানের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান, দুর্গম ও যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকায় জেলার ১৩টি কেন্দ্রে হেলিকপ্টার ব্যবহার করে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও জনবল পাঠানো হয়েছে। গতকাল সকালে বান্দরবান সেনানিবাস থেকে রোয়াংছড়ির রনিন পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দৈয়কুমার পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, থানচির বড় মধু বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রেমাক্রী বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছোট মধু সাখইউ কারবারি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জিন্না পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রুমার তিন্দু গ্রুপিং পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চাইথোয়াইহ্লা কারবারি পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুনতিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাকনিয়া পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চিংলক পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীকদমের পোয়ামুহুরী মৈত্রী স্কুল, মাংরুম পাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কুরুকপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নির্বাচনী কাজের সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম আরও বলেন, বান্দরবানের ১৩টি ভোটকেন্দ্রে যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই, এলাকাগুলো অনেক দুর্গম। তাই এসব এলাকার ভোটকেন্দ্রে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্বাচনী সরঞ্জাম ও জনবল পৌঁছানো হয়েছে। বান্দরবান আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৬ হাজার ৭৫৪ জন। এই আসনে মোট ভোট কেন্দ্র ১৭৬টি। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, বিএনপিরসহ মোট প্রার্থী রয়েছেন চারজন।

রাঙামাটি : জাতীয় সংসদের ২৯৯-পার্বত্য রাঙামাটি আসন নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। নবীন, প্রবীণ তরুণসহ সব বয়সী মানুষের মুখে মুখে এখন নির্বাচনের চর্চা। আলোচনায় উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে পাহাড়ি এ জনপথ। এবার নির্বাচনে রাঙামাটিতে লড়াই হবে চতুর্মুখী। আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে। তাই নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। তবে কে কাকে ভোট দেবেন, তা নিয়ে মনস্থিরের চিন্তায় ভোটাররা। মেলাচ্ছেন হিসাব-নিকাশ। তবে ভোটাররা বলছেন, যে সরকার পার্বত্যাঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ভূমিকা রাখবে তাকেই ভোট দেবে তারা। রাঙামাটি আসনটির নির্বাচনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা। রাঙামাটি জেলার সবচেয়ে দুর্গম কেন্দ্রগুলোতে হেলিকপ্টারে পাঠানো হয়েছে নিবার্চনী সরঞ্জাম ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও। সম্ভাব্য সব সহিংসতা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত প্রশাসন। রাঙামাটি জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা একেএম মামুনুর রশিদ জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে রাঙামাটির ভোট কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। যদিও বর্তমানে রাঙামাটির পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। তবুও জোরদার করা হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা। ৩০ ডিসেম্বর একটি সুষ্ঠু নির্বাচন রাঙামাটিবাসীকে উপহার দেওয়া সম্ভব হবে। রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল হক জানান, রাঙামাটি ১০টি উপজেলার মধ্যে বাঘাইছড়ি, বিলাইছড়ি, রাজস্থলি ও জুড়াছড়ি উপজেলাসহ মোট ১৮টি ভোট কেন্দ্র দুর্গম বলে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্বাচনীয় সরঞ্জাম ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। সেনাবাহিনীর সহায়তায় বৃহস্পতিবার ১৩টি কেন্দ্রে এবং গতকাল সকালে আরও ৫টি কেন্দ্রে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে নির্বাচনীয় সরঞ্জাম ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাঙামাটির ১০টি উপজেলা মিলে এই আসনে রয়েছে ৪ লাখ ১৮ হাজার ২১৭ ভোটার। যার মধ্যে রয়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালির সংমিশ্রণ। নির্বাচনে রাঙামাটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় প্রার্থী। তারা হলেন আওয়ামী লীগের দীপংকর তালুকদার (নৌকা), বিএনপির মণিস্বপন দেওয়ান (ধানের শীষ) এবং জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান এমপি ঊষাতন তালুকদার (সিংহ), জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট পারভেজ তালুকদার (লাঙ্গল), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জুঁই চাকমা (কোদাল) এবং ইসলামি শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মো. জসিম (হাতপাখা)।

সর্বশেষ খবর