সোমবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে অপেক্ষা

মানিক মুনতাসির

ঘটনা-১ : গতকাল সময় সকাল পৌনে ১০টা। স্থান সরকারি বিজ্ঞান কলেজ ভোট কেন্দ্র ফার্মগেট। গেটের বাইরে শত শত ভোটারের জটলা। কিন্তু গেট দিয়ে ঢোকানো হচ্ছিল দু-এক জন করে। বশিরউদ্দীন নামের একজন ভোটার হাতে আইডি কার্ড নিয়ে ঘুরছিলেন। কী সমস্যা- জানতে চাইলে বললেন, এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ভোট হয়ে গেছে।
ভিতরে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে কম বয়সী লিকলিকে গড়নের একজন ভোটারকে দেখা গেল। ভাইয়া আপনার নাম কী? উত্তর : রাজীব। বয়স কত? উত্তর : ১৮ বছর। বাবার নাম কী? উত্তর : অ্যা... অ্যা...। তারপর অন্য একজন এসে তাকে টেনে নিয়ে গেলেন। এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ফেরদৌস বললেন, ‘ভোটর তালিকা আর ভোটার নম্বরের জটিলতার কারণে অনেকেই ভোট দিতে পারছেন না। কিন্তু তাদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে সেখানেও তথ্যে গরমিল।’ ঘটনা-২ : বেলা সোয়া ১১টা। স্থান রোটারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ (মিরপুর)। ভোট কেন্দ্র ঘিওে রেখেছে পুলিশ । কারণ ককটেল ফুটিয়েছে কে বা কারা। ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ হাজার। কেন্দ্রের ভিতরে কোনো ভোটার চোখে পড়েনি এ সময়। প্রিসাইডিং অফিসার রামচন্দ্র বিশ্বাস জানালেন, সোয়া ১১টা পর্যন্ত কাস্ট হয়েছিল ৩৫০-এর মতো। এ কেন্দ্রে নৌকা ও হাতপাখা ছাড়া আর কোনো প্রতীকের এজেন্টকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনা-৩ : বেলা সাড়ে ১১টা। স্থান আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বাইরে ব্যাপক হুড়োহুড়ি। হঠাৎ মিছিল স্লোগান-‘একটা দুইটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর।’ কাছে গিয়ে জানা গেল, কিছুক্ষণ আগে এ কেন্দ্রের বাইরে ককটেল ফাটানো হয়েছে। কিন্তু কোথায়, কারা ককটেল ফাটিয়েছে তা কেউ বলতে পারল না। এমনকি পুলিশও না। এজন্য ভোট গ্রহণ বিলম্বিত। তখনো কেন্দ্রের বাইরে শত শত ভোটার। পরে অবশ্য ভোটারদেও ডেকে ডেকে আনা হয়। পাশাপাশি অসংখ্য ভোটার প্রাণভয়ে ভোট না দিয়ে ফিরে যেতে থাকেন।
ঘটনা-৪ : বেলা সোয়া ১টা। স্থান শেওড়াপাড়া মণিপুর উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ ব্রাঞ্চ-৩। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানো শত শত ভোটার। স্কুল তথা ভোট কেন্দ্রের গেট বন্ধ। মাঝে মাঝে পকেট গেটটি খোলা হচ্ছে আর দু-এক জনকে ঢোকানো হচ্ছে। বাইরে ব্যাপক চেঁচামেচি। পেছন দিকে এসে একাধিক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দুই ঘণ্টা ধরে তারা দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু লাইন এগোচ্ছে না। তারা শেষ পর্যন্ত ভোট দিতে পেরেছেন কিনা জানা যায়নি। মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোডে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু নৌকা মার্কার এজেন্ট দায়িত্ব পালন করছেন। ওই কেন্দ্রে আরও ১০ জন প্রার্থী থাকলেও কারও এজেন্ট ছিল না। একই অবস্থা লক্ষ্য করা গেছে মিরপুর আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট ভোট কেন্দ্রেও। এ কেন্দ্র বেলা পৌনে ১২টায় ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া এবং ঢাকার জার্মানি ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।

সর্বশেষ খবর