পর্যটক আকর্ষণে স্বপ্নের নিঝুম দ্বীপকে সুন্দরবনের আদলে বদলে ফেলা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয়েছে নানামুখী উন্নয়ন পদক্ষেপ। বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে কাজও শুরু করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নানামুখী উন্নয়ন পদক্ষেপের কারণে দ্বীপের সম্ভাবনাময় সেক্টরগুলোর মধ্যে আধুনিক পরিপ্রেক্ষিত বিচারে সবচেয়ে সমুজ্জ্বল হচ্ছে পর্যটন শিল্প। এখানে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে সরকারের পাশাপাশি ম্যাচ গ্রুপ ও ক্যাল নামের দুই এনজিও। খুব সহজে নিঝুম দ্বীপে বন রক্ষায় প্রহরীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বন বিভাগ ও ক্যাল এনজিওর সমন্বয়ে নিজস্ব নৌপরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দ্বীপের নামার বাজারে বন বিভাগের উদ্যোগে নির্মিত একটি উঁচু ওয়াচ টাওয়ারও রয়েছে। সেখানে উঠে উপভোগ করা যায় দৃষ্টিনন্দন সবুজ বেষ্টনীর জাতীয় উদ্যান, যা পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে। সূত্র মতে, বন বিভাগের উদ্যোগে প্রকৃতির সঙ্গে মানানসই অবকাঠামো যুক্ত হলে অচিরেই এটি হয়ে উঠবে পৃথিবীর বিখ্যাত পর্যটন স্পট। কারণ নিঝুম দ্বীপে রয়েছে মৎস্য সম্পদের অফুরান জোগান। প্রকৃতি প্রদত্ত এসব সুবিধা কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির আর্থিক কল্যাণে এ দ্বীপে গড়ে তোলা হবে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট। এখানকার হাজার হাজার হরিণ দ্বীপের অমূল্য সম্পদ। ২০ হাজারেরও বেশি হরিণ দেশের অন্যতম রপ্তানি সেক্টরেও পরিণত হতে পারে। দ্বিগন্তবিস্তৃত জেগে ওঠা চরে পরিকল্পিত বনায়ন করে নিঝুম দ্বীপকে পরিণত করা হবে বাংলাদেশের আরেকটি সুন্দরবনে। এসব শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আজমল হোসেন। তিনি বলেন, আমরা নিঝুম দ্বীপকে আপাতত দুইভাগে বিভক্ত করে সুন্দরবনের আদলে গড়ে তোলার কার্যক্রম শুরু করেছি। ওয়াকিবহালদের মতে, নিঝুম দ্বীপ মানেই স্বপ্নের দ্বীপ। ঝাঁকে ঝাঁকে হরিণের চঞ্চল ছোটাছুটি দ্বীপের নিস্তব্ধতা কেড়ে নেয়। এখানে রয়েছে সুন্দরী, কেওড়া, গেওয়া ও গোলপাতা ইত্যাদি বৃক্ষ। রয়েছে সবুজ প্রাণের বিশাল চরাঞ্চল। এ ছাড়া এখান থেকে দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতসহ অফুরন্ত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করা যায়। এ দ্বীপের যে কোনো স্থান থেকে দেখা যায় সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের দুর্লভ দৃশ্য। দিগন্তের দিকে তাকালে জলরাশির মাঝে দৃষ্টি আটকে যায়। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যম-িত নিঝুম দ্বীপের গর্বে তাই হাতিয়া দ্বীপ গর্বিত। গর্বিত গোটা বাংলাদেশও।