শনিবার, ৫ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

আরাকান আর্মির হামলায় মিয়ানমারের সাত পুলিশ নিহত

প্রতিদিন ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুলিশের চারটি তল্লাশি চৌকিতে হামলা চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করেছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী ‘আরাকান আর্মি’। খবর বিডিনিউজের

রয়টার্স জানিয়েছে, শুক্রবার মিয়ানমারের স্বাধীনতা দিবসে এই হামলা হয় বলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্তর্তী এই রাজ্যেই মিয়ানমার  সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের মুখে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে গত বছর আগস্ট থেকে কয়েক মাসের মধ্যে। সেখানে সংখ্যালঘু বৌদ্ধ রাখাইনদের আরও অধিকারের দাবিতে লড়াইরত আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তুমুল সংঘর্ষ হয় ডিসেম্বরের প্রথম দিকেও। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর সাম্প্রতিক লড়াইয়ে গত বছরের শেষ নাগাদ আড়াই হাজার  বেসামরিক নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। আরাকান আর্মির মুখপাত্র খাইন থু খা রয়টার্সকে বলেছেন, তাদের সদস্যরা চারটি পুলিশ পোস্টে আক্রমণ করেছে এবং পরে সাত ‘শত্রুর’ মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ জন সদস্যকে আটক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। আমরা তাদের ক্ষতি করব না। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে তাদের সদস্যদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর আগ্রাসনের জবাবে এই হামলা চালানো হয়েছে। মিয়ানমারে জাতিগত স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে লড়াইরত বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করতে গত মাসে দেশটির উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে চার মাসের জন্য যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় দেশটির সেনাবাহিনী। তবে ওই ঘোষণায় রাখাইনকে যুদ্ধবিরতির বাইরে রাখা হয়। এর আগে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের এক খবরে গত মঙ্গলবার আরাকান আর্মির হামলায় এক পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হওয়ার কথা জানানো হয়। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর মুখপাত্র জ মিন তুন বলেন, মংডু ও বুথিডং শহরের উত্তরাংশে (বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে) পুলিশ পোস্টগুলোতে শুক্রবারের এই হামলার পাল্টা ব্যবস্থা নিচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। সেনাবাহিনী ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে যাবে। তবে হামলায় কতজন নিহত হয়েছেন এবং সশস্ত্র গোষ্ঠীটি কতজনকে ধরে নিয়ে গেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।  রাখাইনের এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের অধিকাংশই  বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী, যাদের মধ্যে রাখাইনরাও রয়েছে, এদের সবাই মিয়ানমারের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃত হলেও  রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি মিয়ানমার সরকার। জ মিন তুন জানান, ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার ৭১ বছর পূর্তি উপলক্ষে মিয়ানমারজুড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের কয়েক মিনিটের মধ্যেই এই হামলা শুরু হয়। তবে আরাকান আর্মির খাইন থু খা বলেছেন, স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে তাদের এই হামলার কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা এখনো স্বাধীন নই। আজ আমাদের স্বাধীনতা দিবসও নয়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর