সোমবার, ৭ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
৩৫ দেশের কূটনীতিকের সঙ্গে বৈঠক

অনিয়মের চিত্র উপস্থাপন সহযোগিতা চায় ঐক্যফ্রন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ধরে আরেকটা ‘ভালো’ নির্বাচন দিতে সরকারকে বোঝানোর জন্য ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। গতকাল বিকালে গুলশানের একটি হোটেলে ৩৫টি দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন তার অনুরোধের কথা জানান। তিনি বলেন, ‘ভালো আলোচনা হয়েছে। ভোটের  দিন যা ঘটল সেটা আমরা তুলে ধরেছি। তারাও (কূটনীতিকরা) স্বচক্ষে দেখেছেন। আমি বলেছি, তোমরা সরকারকে বুঝাও যে, এর সমাধান করতে হলে আরেকটা ভালো নির্বাচন দিতে হবে।’ জানা যায়, বৈঠকে ভোটে অনিয়ম ও নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন ড. কামাল হোসেন। সেখানে ১০টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরা হয়। একই সঙ্গে ভোটে নানা সহিংসতা ও অনিয়মের ভিডিও ক্লিপও কূটনীতিকদের দেখানো হয়। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন একাদশ নির্বাচনের ভোট পরিস্থিতি ও নির্বাচনের আগে ও পরের ঘটনাবলি তুলে ধরে কূটনীতিকদের ব্রিফিং করেন। পরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও সারা দেশের নির্বাচনী সহিংসতা নিয়ে কথা বলেন। গুলশানে হোটেল আমারিতে বিকাল ৪টা থেকে দেড় ঘণ্টা কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড মিলারসহ যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতসহ ৩০টির বেশি দেশের কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন। রাশিয়া, চীন, কোরিয়া, ফ্রান্স, সুইডেন, স্পেন, জার্মানি, নরওয়ে, ভারত, পাকিস্তান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, সুইজারল্যান্ড, তুরস্ক, নেদারল্যান্ডস, ডেনমার্ক, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কার কূটনীতিকরাও ছিলেন বলে জানিয়েছেন ফ্রন্টের নেতারা। বৈঠকে নির্বাচনে ভোটের নানা অনিয়মের একটি ভিডিও পাওয়ার পয়েন্টও উপস্থাপন করা হয়। কূটনীতিকদের তথ্য-প্রমাণাদিসহ কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়। বৈঠকে নির্বাচনী প্রচারের সময় হামলার শিকার ধানের শীষের প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আফরোজা আব্বাস, রুমানা মোর্শেদ কনকচাঁপা, জেবা খানও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, ড. আসাদুজ্জামান রিপন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, তাবিথ আউয়াল, গোলাম মাওলা রনি, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, গণফোরামের অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মোস্তফা মহসীন মন্টু, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তারা বলেছেন যে, তোমরা কী চাও? আমরা বলি যে, এই নির্বাচন যেহেতু হয়নি। আরেকটা ভালো নির্বাচন সরকার দিলে শান্তিপূর্ণভাবে সবাই ভোট দিতে পারে- এটা হলে শান্তিপূর্ণ সমাধান হবে। দেশের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা সবাই মিলে গড়ব।’ কূটনীতিকরা আপনাদের কথা শুনে কী বললেন, এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের কথা হলো যে, ঠিক আছে ?যা হয়েছে হয়েছে। এখন একটা ভালো নির্বাচন দেওয়া হোক। আমরা বলেছি, সবাই গঠনমূলক একটা ভূমিকা রাখতে পারে। আমরা কারও বিপক্ষে নই।

সরকারকে আমরা বলব যে, আমরা মনে করি, সবার শুভাকাক্সক্ষী হিসেবে দেশে শান্তিপূর্ণভাবে আরেকটা নির্বাচন হলে যা ফলাফল হয় এর ভিত্তিতে একটা গণতান্ত্রিক সরকার হবে। সেই সরকারই মানুষের আকাক্সক্ষা পূরণ করতে পারে।’

সর্বশেষ খবর