মঙ্গলবার, ৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিক্ষুব্ধ গার্মেন্ট শ্রমিকরা আবার রাস্তায়, বাসে আগুন ভাঙচুর

৫ ঘণ্টা পর সচল বিমানবন্দর সড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিক্ষুব্ধ গার্মেন্ট শ্রমিকরা আবার রাস্তায়, বাসে আগুন ভাঙচুর

বকেয়া বেতন পরিশোধ, ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজধানীর উত্তরা এলাকায় গতকাল সোমবারও পোশাক শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। সকাল থেকে বিক্ষোভ শুরু হলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে সব যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এ সময় রণক্ষেত্রে রূপ নেয় মহাসড়কটি। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বিমানবন্দর গোলচত্বরের দক্ষিণপাশে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরিয়ে দিলে আতংক আরও বেড়ে যায়। এ সময় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় পুলিশসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। সকাল ১০টা থেকে চলা অবরোধ দুপুর আড়াইটার দিকে মালিক পক্ষের অনুরোধে তুলে নেয় শ্রমিকরা। অবরোধের কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, বনানী হয়ে মহাখালী পর্যন্ত তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন মানুষ।

বকেয়া বেতন পরিশোধ, ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা গত রবিবার উত্তরা এলাকায় বিক্ষোভ করলে মালিকপক্ষের প্রতিশ্রুতি পেয়ে ওইদিনের জন্য বিক্ষোভ বন্ধ করে তারা। কিন্তু আবারও একই দাবি নিয়ে গতকাল সকালে প্রথমে গাজীপুরের টঙ্গী এলাকায় শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে গাজীপুর শিল্পপুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ধাওয়া দিলে বিক্ষোভকারীরা ওই সড়কের আব্দুল্লাহপুর-উত্তরায় অবস্থান নেয়। এদিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে শ্রমিক আহত হয়েছে এমন খবর আশপাশের কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকরা দলবেঁধে আব্দুল্লাহপুর-উত্তরা-বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেয়। এতে ওই সড়কে সব যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় ঢাকা উত্তর পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে শ্রমিকরা বিমানবন্দর এলাকায় অবস্থান নেয়। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে এনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে (ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৫৩৪৭) আগুন ধরিয়ে দেয় শ্রমিকরা। এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে শ্রমিক অসন্তোষ দমাতে খসরু চোধুরী নামের এক পোশাক কারখানার মালিক শ্রমিকদের কাজে ফিরে যেতে অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, সরকার যে বেতন কাঠামো ঠিক করেছে সে অনুযায়ী শ্রমিকদের বেতন দেওয়া হবে। সরেজমিন দেখা গেছে, বেলা পৌনে ২টার দিকে বিমানবন্দর চত্বর এলাকায় ঢাকামুখী একটি রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স শ্রমিকরা আটকে দেয়। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকরাও পরিচয়পত্র দেখিয়ে যাতায়াত করতে পারেনি ওই সড়ক দিয়ে। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানায়, আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা সড়কেই অবস্থান  নেব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নারী শ্রমিক বলেন, আমরা দিন-রাত খেটে মরি, আর মালিকরা থাকেন আরামে। ট্রাফিক পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) প্রবির কুমার রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পোশাক শ্রমিকরা নানা দাবিতে সড়কে অবস্থান নেয়। এ সময় আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। ইউটার্ন, লেফট টার্নসহ সড়কের সব দিকেই যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করেছি।

সর্বশেষ খবর