শুক্রবার, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

বিক্রি বেশি খাদ্যপণ্যের

বাণিজ্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিক্রি বেশি খাদ্যপণ্যের

বাণিজ্য মেলা থেকে গতকাল যে দর্শকরা বের হয়ে আসছিলেন, তাদের অধিকাংশের হাতেই ছিল খাদ্যপণ্যের প্যাকেট। এমনকি মেলায় যারা ঘুরছিলেন তাদের হাতেও ছিল হরেক রকমের খাদ্যপণ্যের প্যাকেট। বোঝা গেল মেলায় খাদ্যপণ্যের বিকিকিনি বরাবরের মতোই তুঙ্গে। আর হবেই না বা কেন! মেলার বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নে খাদ্যপণ্যের ওপর দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ছাড়। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে হরেক রকম প্যাকেজের ছড়াছড়ি। আর একটি কিনলে আরেকটি পণ্য ফ্রির অফার তো আছেই। গতকাল বাণিজ্য মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, আগত দর্শক-ক্রেতাদের মধ্যে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত উভয় শ্রেণির ক্রেতাই খাদ্যপণ্যের স্টলগুলো ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন অফার যাচাই-বাছাই করছেন। শুধু তা-ই নয়, বাজারমূল্য থেকে কম দামে বিক্রি হওয়ায় আগত ক্রেতারাও হাতবোঝাই করে খাদ্যপণ্য কিনছেন। প্রাণের ফুড বেভারেজ স্টলে গিয়ে দেখা যায়, মি. নুডলসের প্যাকেট বেশ বিক্রি হচ্ছে। মেলায় ২৮ প্যাকেটের মি. নুডলসের একটি জার বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায়, যা বাজারে বিক্রি হয় ৪০০ টাকায়। আবার একই কোম্পানির নুডলসের ৩৬ প্যাকেটের গিফট হ্যাম্পার বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়। কিন্তু এর বাজারমূল্য ৫৭০ টাকা। ক্রেতা আকর্ষণে এর সঙ্গে বালতিও ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রাণের ঝটপট স্টলের খাবার আইটেমগুলোরও বিক্রি বেশ ভালো। এর মধ্যে প্যাকেটজাত বিভিন্ন ফ্রজেন আইটেম-পরোটা, সমুচা, শিঙাড়া, চিকেন নাগেট কিনতে ক্রেতারা ভিড় করছেন। স্কয়ার ফুডস অ্যান্ড বেভারেজের প্যাভিলিয়নেও ক্রেতারা ভিড় করেছেন নানা রকম খাদ্যপণ্য কিনতে। স্কয়ারের বিক্রেতারা জানান, তাদের রুচি কুকিজ আইটেমের বিক্রি বেশ ভালো। এর বাইরেও গৃহিণীদের এই স্টলে চাষি চিনিগুঁড়া চালের প্যাকেট কিনতে দেখা যায়। এই চিনিগুঁড়া চালের প্যাকেটের সঙ্গে বিরিয়ানি মসলা ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। মেলায় নাবিস্কোর স্টলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ক্রেতাদের ভিড়ও চোখে পড়ার মতো। নাবিস্কো বিস্কুটের বিভিন্ন অফারের পাশাপাশি ক্রেতারা নিজেদের পছন্দ ও চাহিদামতো ছোট প্যাকেটও সংগ্রহ করছেন। বিশেষ করে নাবিস্কো বিস্কুটের বড় জারগুলোর প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি।

মেলায় হাতে তৈরি পাপড়, নাড়ু, ডালের চিপসের চাহিদাও বেশ ভালো। বাণিজ্য মেলায় বেশ কয়েকটি ছোট স্টলে এসব ঘরে তৈরি খাবারের আইটেম বিক্রি হচ্ছে। মিরপুরের এক গৃহিণী সানজিদা খাতুন তিলের নাড়– কিনছিলেন। তিনি জানান, মেহমান আপ্যায়নে এবং সন্তানদের টিফিনে তিনি এই খাবারের আইটেমগুলো সব সময় বাসায় রাখেন। বাণিজ্য মেলার ৩২ নম্বর প্রিমিয়ার স্টলে মিষ্টিপ্রেমীদের জন্য হরেক রকমের মিষ্টি এনেছে ‘মিঠাই’। এখানে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি যেমন পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি আছে বেশ কয়েকটি প্যাকেজ। মিঠাইয়ের ছয়টি প্যাকেজের মধ্যে আছে আনন্দ, হইচই, আপ্যায়ন, লাড্ডুর জাদু, মেহমানদারি ও ফ্যামিলি প্যাক। এই স্টলে সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায় মিষ্টান্ন পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই স্টলের বিক্রেতারা জানান, তাদের প্যাকেজের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলছে আনন্দ প্যাকেজ। ৫০ টাকার এই প্যাকেজে থাকছে ভেজিটেবল সমুচা, মিহিদানা লাড্ডু, কালোজাম ও নিমকি। এই স্টলের সামনে কথা হলো মোহাম্মদপুর থেকে আগত এক শিক্ষার্থী শরিফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, মেলার স্টলগুলোতে খাবারের গলাকাটা দাম। কিন্তু এসব স্টলে যেসব প্যাকেজ আইটেম পাওয়া যাচ্ছে, তা দামে ও মানে বেশ ভালো। বাণিজ্য মেলার খাবার স্টলগুলো নিয়ে ক্রেতাদের পুরনো অভিযোগ এবারও আছে। গতকাল ‘স্পাইসি ওয়ার্ল্ড’ নামক এক খাবারের স্টলের সামনে পুরান ঢাকার ব্যবসায়ী আহমেদ জব্বার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘এখানে দুই বাচ্চাকে নিয়ে চিকেন বিরিয়ানি খেলাম। হাফ প্লেটের জন্য দ্বিগুণ দাম ১৭০ টাকা রেখেছে। আর ৩০০ গ্রামের একটি চিকেন ফ্রাইয়ের দাম ১৯০ টাকা। ক্রেতারা একরকম বাধ্য হয়েই এসব স্টলে অতিরিক্ত দাম দিয়ে খাবার খাচ্ছেন।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর