শনিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

দর্শনার্থীর ঢলে প্রাণবন্ত বাণিজ্য মেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দর্শনার্থীর ঢলে প্রাণবন্ত বাণিজ্য মেলা

প্রায় দেড় লাখ ক্রেতা-দর্শনার্থীর ঢলে গতকাল প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল এবারের ২৪তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৯। বাণিজ্য মেলার দশম দিন শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকাল থেকেই তারুণ্যের পদচারণায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে ওঠে শেরেবাংলা নগর  প্রাঙ্গণ। আর বেলা গড়িয়ে দুপুরে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের নিয়ে বয়স্কদের সরব উপস্থিতিতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। বিকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি দীর্ঘ সারি সারি লাইনে দাঁড়িয়ে কিছুটা ভোগান্তি নিয়েই মেলা মাঠে প্রবেশ করেছেন সব শ্রেণি-পেশার ক্রেতা-দর্শনার্থীরা। সব মিলিয়ে বাণিজ্য মেলা পরিণত হয় বিশাল জনসমুদ্রে। এবার মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের বিপুল সমাগমে খুশি আয়োজক প্রতিষ্ঠান রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো- ইপিবির মহাপরিচালক অভিজিৎ চৌধুরী। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অপ্রত্যাশিত সাড়া পেয়েছি। বিপুল ক্রেতা-দর্শনার্থী জড়ো হয়েছেন মেলায়। গতকাল দিন শেষে মেলায় দেড় লাখ মানুষের সমাগম হওয়ার কথা জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা। বাণিজ্য মেলার প্রবেশ গেট ইজারাদার প্রতিষ্ঠান মীর ট্রেডার্সের কর্ণধার মীর শহিদুল আলম সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ইতিমধ্যে এক লাখ ১০ হাজার দর্শনার্থী মেলায় প্রবেশ করেছেন। এদিকে মেলা প্রাঙ্গণে দেখা যায়- দর্শনার্থীরা বিভিন্ন স্টল আর প্যাভেলিয়নগুলোতে ঘুরে ঘুরে পণ্য সামগ্রী দেখছেন। কেউ কেউ কেনাকাটা করছেন। প্রতিটি স্টলেই এই চিত্রের দেখা মিলেছে। খাবারের দাম বাড়তি হলেও ভিড়ের কমতি ছিল না খাবারের দোকান ও রেস্টুরেন্টগুলোতে। রাজধানীর বনশ্রী থেকে সপরিবারে মেলায় আসা কুসুম রহমান প্রচুর কেনাকাটা শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। আলাপকালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মূলত বাসার কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনেছি। দামও কিছুটা কম পেয়েছি। আবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে কিছু সময় একসঙ্গে কাটালাম, এটাও ভালো লেগেছে। উত্তরার আজমপুর থেকে মেলায় আসা গৃহিণী সুস্মিতা রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, মূলত বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। কয়েকটা পছন্দের জিনিস আছে। দু-এক দিন পর আবার এসে কিনব। তবে তার সঙ্গে আসা বন্ধুরা কেনাকাটা করেছেন। তবে মেলায় বাড়তি দাম ও অনেক ভেজাল পণ্য দেখার কথা জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর থেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মহসিন হোসেন। তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বিভিন্ন দেশের নাম করে কিছু পণ্য মেলায় রয়েছে, যেগুলো দেখে মনে হচ্ছে, তা নকল ও ভেজাল। আবার কিছু কিছু স্টল-প্যাভিলিয়নে দেশি উৎপাদিত পণ্য বিদেশি বলে বিক্রি হচ্ছে বলে মনে করেন এই দর্শনার্থী। অপরদিকে প্রতিবছরের মতো এবারও ক্রেতাদের কাছে টানতে বিক্রেতারা নানান কৌশল নিয়েছেন। দেওয়া হচ্ছে- বিভিন্ন অফার। আছে মূল্য ছাড়, একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি, আগে আসলে আগে পাবেনের সুবিধা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি যৌথভাবে আয়োজিত এবারের মেলা শুরু হয় গত ৯ জানুয়ারি। চলবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত মেলা সব ক্রেতা-দর্শনার্থীর জন্য উন্মুক্ত থাকবে। মেলায় প্রবেশের জন্য প্রাপ্ত বয়স্কদের ৩০ টাকা ও অপ্রাপ্ত বয়স্কদের ২০ টাকা মূল্যের টিকিট কিনতে হবে। এবার টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাচ্ছে। আয়োজকরা জানিয়েছেন- এবার মেলায় আছে মা ও শিশু কেন্দ্র, শিশুপার্ক, ই-পার্ক ও পর্যাপ্ত এটিএম বুথ। আরও আছে- রেডিমেড গার্মেন্ট পণ্য, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্প, পাট ও পাটজাত পণ্য, গেরস্থালী ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য। আরও আছে তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী। এ ছাড়াও আছে- খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি, নির্মাণ সামগ্রী ও ফার্নিচার সামগ্রী।

সর্বশেষ খবর