সোমবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
অমর একুশে গ্রন্থমেলার প্রস্তুতি

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের আবহ মেলাজুড়ে

মোস্তফা মতিহার

ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের আবহ মেলাজুড়ে

আর কদিন পরেই নতুন বইয়ের গন্ধ আর ক্রেতা-বিক্রেতা ও পাঠকদের পদচারণায় মুখরিত হবে স্বাধীনতার স্মৃতিবিজড়িত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১৯ এর আয়োজন নিয়ে বর্তমানে চলছে শেষ সময়ের প্রস্তুতি। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে স্টল নির্মাণের কাজ শেষ করার বিষয়ে মেলার আয়োজক সংস্থা বাংলা একাডেমির নীতিগত সিদ্ধান্তের কারণে হাতুড়ি বাটালের টুংটাং শব্দে মুখরিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নির্মাণ শ্রমিকদের ব্যস্ততাও চোখে পড়ার মতো। ’৫২-এর ভাষা আন্দোলনের বিজয়ের পথ ধরেই একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ। একুশের শক্তি থেকেই একাত্তরের অনুপ্রেরণা। আর দুই বছর পর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং এক বছর পর স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আর বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ঘিরে এবারের মেলায় প্রাধান্য পাচ্ছে ‘বিজয় থিম’।  সেই ভাবনা থেকে মেলার সবচেয়ে বড় বিষয়টি নকশার নান্দনিকতা। ‘বিজয় ১৯৫২ থেকে একাত্তর : নবপর্যায়’ এই প্রতিপাদ্যে ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধকে উপজীব্য করে বিস্তৃত হবে পুরো মেলা প্রাঙ্গণ। সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে বাংলা একাডেমি। নকশার নান্দনিকতা ও বিজয় থিমের পাশাপাশি প্রযুক্তিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, ‘বিজয়’ থিমে অমর একুশে গ্রন্থমেলা সাজানোর জন্য সব প্রস্তুতি প্রায় শেষের পথে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের স্বাধীনতা স্তম্ভের গ্লাস টাওয়ারের আলোয় আলোকিত করার পরিকল্পনা রয়েছে এবারের মেলাকে। এজন্য স্বাধীনতা স্তম্ভের পাশ ঘেঁষে থাকা টিনের প্রাচীরটি এবার খুলে দেওয়া হচ্ছে। মেলায় আগত দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের বিশ্রামের জন্য বসার স্থান, মানসম্মত টয়লেট, সহনশীল দামে খাবার ইত্যাদি বিষয়গুলো মাথায় রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে একাডেমি সূত্র। অন্যান্য বছর মেলা শুরুর পরও অনেক প্রকাশক স্টল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারেন না। নির্মাণ কাজের টুংটাং শব্দে মেলার পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার কারণে এবারের মেলায় ৩০ জানুয়ারির পর কোনো স্টলের কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৩০ জানুয়ারির মধ্যে কারও স্টল নির্মাণ না হলে সেই স্টল বন্ধ করে দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে মোড়ক উন্মোচন মঞ্চের পাশাপাশি এ বছরের মেলায় নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ‘লেখক বলছি’ নামের একটি মঞ্চ। আর এই মঞ্চ থেকে প্রতিদিন মেলায় প্রকাশিত বইয়ের মধ্য থেকে পাঁচটি মানসম্পন্ন বই নিয়ে পাঁচজন লেখক নিজ নিজ বই ও লেখা নিয়ে কথা বলবেন। সে জন্য এক দিন আগে বই জমা দিতে হবে। সেখান থেকে বাছাইয়ের মাধ্যমে লেখক ও বই নির্বাচন করা হবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও বাংলা একাডেমির পরিচালক ড. জালাল আহমেদ বলেন, ‘লেখক বলছি’ মঞ্চ থেকে প্রত্যেক লেখক নিজে তার বই নিয়ে ৮ মিনিট, উপস্থাপক ২ মিনিট বলার পর দর্শকদেরও প্রশ্নোত্তরের পর্ব থাকবে। যার ফলে পাঠক ক্রেতারা মেলায় প্রকাশিত ভালো বইগুলো নিয়েও জানতে পারবেন। বরাবরের মতো মেলা চলবে বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তবে রাত সাড়ে ৮টার পর আর কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না।

সর্বশেষ খবর