সোমবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
ডাকসু নির্বাচনে আচরণবিধি

যত প্রস্তাব ছাত্র সংগঠনগুলোর

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়নের জন্য ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রস্তাবনা পেশ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে লিখিত ও মৌখিক উভয়ভাবেই আচরণবিধির ব্যাপারে বক্তব্য জানায় তারা। গতকাল পর্যন্ত সব সংগঠনের প্রস্তাব পেশ সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে, আচরণবিধি প্রণয়নের ব্যাপারে ক্যাম্পাসে সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর কাছে আচরণবিধির খসড়া সংবলিত চিঠি পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রক্টর এ কে এম গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আচরণবিধির ব্যাপারে তাদের মতামত বা সুপারিশ জানাতে অনুরোধ করা হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ছাত্রসংগঠনগুলো তাদের মতামত প্রশাসনের কাছে তুলে ধরে।

ছাত্রসংগঠনগুলোর প্রস্তাবনাসমূহ  : আচরণবিধির ব্যাপারে ছাত্রলীগ তাদের বক্তব্য মৌখিকভাবে প্রশাসনকে জানায়। এ ব্যাপারে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা প্রোগ্রাম বা শোডাউন করার জন্য রিটার্নিং অফিসারের কাছ অনুমতি নেওয়ার সময়সীমা ৪৮ ঘণ্টার পরিবর্তে ২৪ ঘণ্টার পক্ষে প্রস্তাব দিয়েছি। বলেছি, কোনো সংগঠনই তাদের সাবেক নেতাদের দিয়ে কোনো ভাবেই প্রচার চালাতে পারবে না। কারণ তা হলে আসলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্ন ঘটবে। এ ছাড়াও দেয়াল লিখনের বিষয়টি এবং প্রচারণার সময় প্রয়োজনে আরও সীমিত করার প্রস্তাব দিয়েছি। আমি মনে করি, প্রার্থিতার বিষয়টি সমাধান করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয়ভাবে নির্বাচনী বিতর্ক সভা আয়োজন করতে পারে।

অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ও সাবেক ডাকসু নেতাদের প্রচারণায় সুযোগ দেওয়ার প্রস্তাবনা জানিয়েছে জাতীয়বাদী ছাত্রদল। তাদের অন্য প্রস্তাবনাগুলো হলো- সভা-সমাবেশ করার অনুমতি সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে নেওয়ার বিধান শিথিল করা, গোপন বুথ ব্যতীত ভোটকেন্দ্র থেকে অবাধ প্রচারের মাধ্যম উন্মুক্ত রাখা প্রভৃতি। গত ২৬ জানুয়ারি বিকালে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন তাদের মতামত প্রক্টর কার্যালয়ে পেশ করে। এতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে সাংবাদিকদের ছবি তোলা ও ভিডিও করার ব্যবস্থা থাকা, সভা-সমাবেশ করার অনুমতি সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টা পূর্বে নেওয়ার বিধান করা, প্রার্থীর জন্য সর্বোচ্চ পোস্টারের সংখ্যা নির্ধারণ, নির্বাচনী ক্যাম্প ও রঙিন পোস্টার না করা, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক ভোটারদের স্লিপ প্রদানের ব্যবস্থা করাসহ ১১ দফা প্রস্তাবনা জানায় তারা। এ ছাড়াও, প্রচারণার সময় রাত ১২টা পর্যন্ত বর্ধিত করা, সভা-সমাবেশের জন্য লিখিত অনুমতির বিধান বিলুপ্ত করা, পোস্টার ও লিফলেটের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা, গণচাঁদার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা ও ক্লাস ক্যাম্পেইনের বিধান যুক্ত করার প্রস্তাবনা জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। এদিকে প্রশাসনের চিঠি না পেলেও বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ লিখিতভাবে তাদের বক্তব্য প্রশাসনকে জানায়। তারা ভোটগ্রহণের সময়সীমা সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টার পরিবর্তে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত নির্ধারণ করা, ভোটকেন্দ্রে শিক্ষকদের সমন্বয়ে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট পর্যবেক্ষণ কমিটি ও ভোটকেন্দ্র থেকে লাইভ সম্প্রচারসহ অবাধ প্রচারের মাধ্যম উন্মুক্ত রাখা প্রভৃতি প্রস্তাবনা পেশ করেছে। উল্লেখ্য, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের আচরণবিধি প্রণয়নে গত ১৯ জানুয়ারি সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও ডাকসুর সভাপতি ড. মো. আখতারুজ্জামান। উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নাসরীন আহমাদের নেতৃত্বে ওই কমিটি আচরণবিধি প্রণয়নে কাজ করছে। তবে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। আগামী মঙ্গলবার সিন্ডিকেটের সভা বসার কথা রয়েছে।

সর্বশেষ খবর