শনিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা
কৃষি সংবাদ

কুষ্টিয়ার মধু যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়

জহুরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার মধু যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়

এবার সুদূর অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছে কুষ্টিয়ায় উৎপাদিত মধু। এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ কুষ্টিয়ার মিরপুরের মৌচাষি মামুনের। তিনি সরিষা খেতে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু উৎপাদন করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। এখন স্থানীয় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি সেই মধু অষ্ট্রেলিয়াতে রপ্তানি শুরু করেছেন তিনি। বিষয়টি বেশ সাড়া ফেলেছে এলাকায়। মামুনের দেখাদেখি অনেকেই এখন মৌচাষে উদ্যোগী হচ্ছেন। মামুনের মৌচাষের শুরু ১৯৯৭ সালে। তিনি জানান, মাস্টার্স পাস করার পর চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে কিছু করার কথা ভাবছিলাম। তখন মৌমাছি পালন করে মধু উৎপাদনের কথা মাথায় আসে। ২৬০০ টাকা দিয়ে দুটি বাক্স কিনে ওই বছরই শুরু করি মৌমাছি পালন। সেই থেকে মামুন সরিষা, কালজিরা, লিচু, কুলসহ বিভিন্ন ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করে আসছেন। ধীরে ধীরে মামুনের মৌচাষের পরিধি বেড়েছে। আগে তিনি উৎপাদিত মধু স্থানীয়ভাবেই বিক্রি করে আসছিলেন। পরে ফেসবুকে পরিচয় হয় অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক বাংলাদেশি যুবকের সঙ্গে। তার সহায়তায় মামুন গত বছর থেকে মধু প্রক্রিয়াজাত করে অষ্ট্রেলিয়াতে রফতানি শুরু করছেন। চলতি সরিষা মৌসুমে জেলার বিভিন্ন স্থানে মৌমাছির ৩০০টি বাক্স বসিয়েছেন মামুন। এর থেকে তিনি প্রায় ৮০ টন মধু আহরণের আশা করছেন। এর বড় একটি অংশ অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হবে। এই মৌচাষের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন এক সময়ের বেকার যুবক মামুন। মামুনের মৌ খামারে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা সুস্বাদু মধু। এই কাজে মামুনের সহযোগী হিসেবে বেশ কয়েকজনের কর্মসংস্থানও হয়েছে। মামুনের খামারে উৎপাদিত মধুতে  কোনো ক্ষতিকারক কেমিক্যাল মেশানো হয় না।  ক্রেতাদের সামনেই মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়। তাই এলাকার মানুষ মাত্র ৩০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকায় এক কেজি খাঁটি মধু পেয়ে বেজায় খুশি। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার জানান, এ বছর কুষ্টিয়ায় ৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ৪০০ হেক্টর জমিতে মৌমাছির বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ মধু উৎপাদন হচ্ছে, অন্যদিকে সরিষা খেতে বিপুল পরিমাণ মৌমাছির বিচরণের ফলে সুষম পরাগয়ন হচ্ছে। এতে সরিষার ফলন বৃদ্ধি, কৃষকদের আয় বৃদ্ধিসহ কর্মসংস্থানের জন্য মৌচাষে সহযোগিতা করা হচ্ছে। আরও বড় পরিসরে মৌচাষের মাধ্যমে মধু সংগ্রহ করলে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিপুল পরিমাণ মধু বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

সর্বশেষ খবর